এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুদক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সম্পদ বিবরণী দিতে যাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে তারা হলেন এনবিআর সদস্য মো. লুৎফুল আজিম, সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (সিআইসি) মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ডু, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার কাজী মো. জিয়াউদ্দিন, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া, কর অঞ্চল-১৬ এর উপ কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, কর অঞ্চল-৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল-১৬-এর উপ কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা, নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মামুন মিয়া, গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ ও কর অঞ্চল-৩-এর কমিশনার এম এম ফজলুল হক।
আক্তার হোসেন বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে— এসব কর্মকর্তাদের নামে বা তাদের পক্ষে অন্য কারও নামে এমন সম্পদের খোঁজ মিলেছে, যা বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ কারণে তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এর আগে গত ২৯ জুন এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেয় দুদক। পরে ১ জুলাই আরও পাঁচজন এবং ৩ জুলাই আরও পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের কথা জানানো হয়।
জুন মাসে এনবিআরে সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আন্দোলন শুরু হয়। এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপরসারণ দাবিতে এক সপ্তাহের কলম বিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ও সবশেষ দুই দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালনের পর কাজে ফেরেন আন্দোলনকারীরা।
এনবিআরে টানা আন্দোলনের মধ্যে কমপ্লিট শাটডাউনের নড়েচড়ে বসে সরকার। এনবিআরের সেবা অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণা করে আন্দোলনরতদের কাজে যোগ দিতে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এর মধ্যেই আন্দোলনরত ১৬ এনবিআর কর্মকর্তার ‘দুর্নীতির’ তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় দুদক। আর সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার।
নানা নাটকীয়তার মধ্যে পরে ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানেই মেলে সমাধানের সূত্র।
ওই বৈঠকে ইতিবাচক আশ্বাসের ভিত্তিতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়। পরদিন কাজে ফেরেন এনবিআরের কর্মীরা।