শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পদ হারালেন ছাত্রদল নেতা
শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক আহমেদ অন্তর পদ হারালেন। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত রবিবার জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান পাঠান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইসহাক আহমেদ অন্তরকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শামছুল হুদা শামীম এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার, ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন ইসহাক আহমেদ।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘জন্ম অথবা মৃত্যুর কোন বিশেষত্ব নেই, মুখ্য হলো মানুষের হৃদয় জয় করা। শুভ জন্মদিন দেশ মাতা, বিনম্র শ্রদ্ধা জাতির পিতা।‘ পোস্টটি নজরে এলে ১৭ আগস্ট দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয় জেলা ছাত্রদল।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এর কারণ দর্শাতে বলা হয়। তবে ইসহাক আহমেদ দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উল্টো ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে স্বেচ্ছায় দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার কথা জানান। পরদিন তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে ইসহাক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে আরও এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার ব্যক্তি দর্শন, মুক্তচিন্তা, অহিংসা, ভিন্নমত পোষণ করার মানসিক ভাবনাটা যদি হয় ছাত্রদলের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং অর্পিত দায়িত্বের অবহেলা, তবে আমি আমার সকল রাজনৈতিক পদ পদবি ও দায়িত্বের জায়গা হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম।
যাদের আত্মত্যাগ, সুযোগ্য নেতৃত্ব ও পাহাড়সম নিরলস প্রচেষ্টায় আজকের বাংলাদেশ। তারা যেকোনো দলের, ধর্মের, বর্ণের, জাতির, শ্রেণির, অঞ্চলের তাদের সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ভালোবাসা বহমান। আমি আমার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের পাশে, দলের পাশে, নির্যাতিত মানুষের পাশে অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামিউল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এমন পোস্ট সে করতে পারে না। এটি দলের আদর্শ ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী। এ ঘটনায় তাকে শোকজ করার পর বিনয়ের সঙ্গে জবাব দেওয়ার দরকার ছিল। জবাব না দিয়ে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। ফলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত।