ঋণের কিস্তির চাপে পানচাষির আত্মহত্যা

রাজশাহী ব্যুরো
১৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩:০৩
শেয়ার :
ঋণের কিস্তির চাপে পানচাষির আত্মহত্যা

রাজশাহীর মোহনপুরে ঋণের চাপে আত্মহত্যা করেছেন আকবর হোসেন (৫০) নামের এক পানচাষি। আজ সোমবার ভোরে নিজের পান বরজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। আকবর খাড়ইল গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে।

 স্থানীয়রা জানান, পানের চাষ করেই চলতো আকবরের সংসার। তবে এ বছর পান বিক্রি করে তেমন আয় হয়নি, বাজারে দাম পড়ে গেছে। অথচ মাথার ওপর ছিল ১১টি এনজিও ও স্থানীয় সুদ কারবারিদের অন্তহীন চাপ। প্রায় ৬-৭ লাখ টাকার ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন।

আকবর হোসেনের পরিবার বলছে, ঋণের বোঝা আর অপমান সইতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। আকবর হোসেনের ঋণ ছিল ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ভার্ক, ডিএফইডি, শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, রিক, ইএসডিও, গ্রামীণ প্রচেষ্টা, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে) এবং গণ-উন্নয়ন কেন্দ্র (গাক) নামের অন্তত ১১টি এনজিওতে।

 আকবরের ছেলে সুজন শাহ বলেন, ‘বাবা অন্তত চার লাখ টাকা এনজিও থেকে নিয়েছিলেন। বাকি ছিল সুদের টাকার বোঝা। প্রতি সপ্তাহেই ৫ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হতো, কিন্তু এবার পানের কোনো দাম নাই। এক বিঘা জমির পান বরজের আয়ে সংসার চলত। এনজিওর লোকেরা প্রতিদিন এসে চাপ দিত, কিস্তির টাকা চাইত। বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঋণের চাপে বাবাকে মরতে হলো।’

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, আকবর হোসেন কৃষক মানুষ ছিলেন। এ বছর পান চাষে লোকসান হয়েছে। ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে আকবর হোসেনের পরিবার মরদেহের ময়নাতদন্তে রাজি নয়। তারাও মামলা করতে চাইছেন না। যদি পরিবার এনজিওর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করে, তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত জেলার পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে মিনারুল নামের এক ব্যক্তি ‘ঋণের চাপ ও খাবারের অভাবে’ স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন।