বিশ্বনেতাদের বৈঠকে নজিরবিহীন যত অভ্যর্থনা ও নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
বিশ্বনেতাদের বৈঠকে নজিরবিহীন যত অভ্যর্থনা ও নিরাপত্তা

আন্তর্জাতিক কূটনীতির ইতিহাসে একেকটি বৈঠক শুধু আলোচনার কারণে নয়, বরং অভ্যর্থনার ধরন ও নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্যও বিশ্বমিডিয়ার শিরোনাম হয়। কয়েকদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বৈঠক থেকে শুরু করে কিম জং উনের ট্রেনে সফর কিংবা

নেলসন ম্যান্ডেলা থেকে জো বাইডেন- প্রতিটি বৈঠকের নিরাপত্তাব্যবস্থা ইতিহাসে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আজহারুল ইসলাম অভি

ভিয়েতনামে ট্রাম্প-কিম জং উন

২০১৯ সালে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উনের বৈঠকটি ছিল নজিরবিহীন নিরাপত্তার উদাহরণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক উপলক্ষে আড়াই দিনেরও বেশি সময়ের ট্রেনযাত্রা শেষে ভিয়েতনামে পৌঁছেছিলেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। চীনসংলগ্ন ভিয়েতনামের সীমান্তবর্তী স্টেশন ডংড্যাংয়ে থামে কিমকে বহনকারী রহস্যময় ট্রেন। ডংড্যাংয়ে কিমকে স্বাগত জানান ভিয়েতনামের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বরাবরেই মতোই গাঢ় কালো মাও স্যুট পরেন কিম। ভিড়ের মধ্যে হাস্যোজ্জ্বল মুখে ছবিও তোলেন তিনি। স্টেশন ছাড়ার সময় কিমের গাড়ি ঘিরে দৌড়ান উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা। এই গাড়িবহরে করেই ডংড্যাং থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরের হ্যানয়ে পৌঁছেন তিনি। চীনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের ডংড্যাংয়ে আসতে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে তিন হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের বৈঠক উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদের ঢেকে ফেলা হয়েছিল হ্যানয়কে। ভিয়েতনাম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

অভ্যর্থনা

কিম জং উন বুলেটপ্রুফ ‘গ্রিন ট্রেন’-এ করে ৪,০০০ কিমি পাড়ি দেন। স্টেশন থেকে হোটেল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে শত শত সেনা মোতায়েন ছিল।

নিরাপত্তাব্যবস্থা

প্রতিটি রেলস্টেশন অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। রেললাইনের পাশের ভবনগুলোতে স্নাইপার মোতায়েন করা হয়। কিমের গাড়িবহরের সঙ্গে সমান্তরালভাবে বিশেষ ট্রেন চলেছে, যেখানে তার নিরাপত্তা বাহিনী ছিল।সফরের প্রতিটি জায়গায় স্থানীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট দায়িত্ব পালন করেছে।

কিউবায় বারাক ওবামা

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কিউবা সফর ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এটি ছিল ১৯২৮ সালের পর প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের কিউবা সফর। দীর্ঘ ৮৮ বছরের শীতল সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই সফর ঘিরে কেবল কূটনৈতিক তাৎপর্যই নয়, বরং নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও সারাবিশ্বের নজর ছিল হাভানার দিকে।

হাভানায় ‘২৪ ঘণ্টার লকডাউন’

সফরের সময় পুরো রাজধানী হাভানাকে কার্যত একটি সামরিক অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছিল। মূল সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, শুধু সরকারি বহরের গাড়ি চলাচলের অনুমতি ছিল। আকাশসীমায় স্থায়ী টহল চালায় কিউবার যুদ্ধবিমান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানের নিরাপত্তার জন্য আকাশে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থাও সক্রিয় ছিল। ওবামার আগমনের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই শহরের রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা করে ফেলা হয়Ñ দোকানপাট বন্ধ, গণপরিবহন সীমিত, এমনকি সাধারণ নাগরিকদের চলাচলও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ছিল।

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা

ওবামার অবস্থান ছিল হাভানার ঐতিহাসিক হোটেল নাসিওনাল এবং তার সরকারি অনুষ্ঠানগুলো হাভানার মূল চত্বরে আয়োজন করা হয়। প্রতিটি ভেন্যু সফরের আগে একাধিকবার তল্লাশি করে সিলগালা করা হয়। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস সরাসরি নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়, তবে কিউবার গোয়েন্দা সংস্থা (DGI) ও সামরিক বাহিনীও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিল। হাভানার রাস্তায় সশস্ত্র টহল, ভবনের ছাদে স্নাইপার এবং প্রতিটি প্রবেশপথে নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়।

আইসল্যান্ডে রিগান ও গরবাচেভ

রেইকিয়াভিক সম্মেলন ১৯৮৬

শীতল যুদ্ধের উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে ১৯৮৬ সালের অক্টোবর মাসে আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকিয়াভিকে মুখোমুখি বসেছিলেন দুই বিশ্বশক্তির নেতাÑ মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গরবাচেভ। ছোট্ট দেশ আইসল্যান্ড হঠাৎ করেই বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।

সামরিক ঘাঁটিতে রূপ নেওয়া শহর

সেই বৈঠক ঘিরে পুরো রেইকিয়াভিককে যেন একটি সামরিক দুর্গে রূপ দেওয়া হয়। রাজধানীর চারপাশের রাস্তাগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহরের আকাশসীমায় যোদ্ধা বিমান এবং হেলিকপ্টার টহল দেয়। মার্কিন নৌবাহিনী উত্তর আটলান্টিক উপকূলে অবস্থান নেয়, আর সোভিয়েত নৌবাহিনীও নিজেদের সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ নিয়ে কাছাকাছি জলসীমায় টহল দেয়।

আলাদা রুট, দ্বৈত নিরাপত্তা

রোনাল্ড রিগান ও মিখাইল গরবাচেভÑ দুই নেতা একই হোটেলে থাকলেও তাদের যাতায়াত ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রুটে। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস প্রেসিডেন্ট রিগানের নিরাপত্তা সামলায়, যাতে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকে। অন্যদিকে, গরবাচেভের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল কুখ্যাত কেজিবি। তারা গোপনে শহরের বিভিন্ন ভবনে স্নাইপার মোতায়েন করে এবং কেজিবির বিশেষ বাহিনী প্রতিটি প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ করে। দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ এড়ানো হয়Ñ কারণ কেউ কাউকে বিশ্বাস করছিল না।

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থা

বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল হফদি হাউসে। বৈঠকের আগেই পুরো বাড়িটি কয়েকবার তল্লাশি করা হয়, বাগিং ডিভাইস বা গুপ্তচর যন্ত্রপাতি আছে কিনা তা খুঁজতে। জানালাগুলোতে বিশেষ প্রতিরক্ষামূলক পর্দা বসানো হয় যাতে দূর থেকে লেজার মাইক্রোফোন দিয়ে আড়ি পাতা সম্ভব না হয়। দুই নেতার জন্য ব্যবহৃত টেলিফোন লাইনগুলো এনক্রিপশন দিয়ে সুরক্ষিত করা হয়েছিল।

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন

সম্প্রতি আলাস্কার মাটিতে আয়োজিত সাম্প্রতিক ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক ঘিরে পুরো এলাকা ছিল অবরুদ্ধ শহরের মতো। আলাস্কার এক বিমানঘাঁটিতে পুতিনের আগমন উপলক্ষে ট্রাম্প লাল গালিচা বিছিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম পশ্চিমা মাটিতে বৈঠকে গেলেন পুতিন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ট্রাম্প বিমানঘাঁটির টারমাকে ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়ে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করেছেন। পুতিন এগিয়ে আসতেই ট্রাম্প হাততালি দিতে থাকেন। এরপর উষ্ণ করমর্দন ও হাসিমুখে একে অপরকে স্বাগত জানান।

লাল গালিচা ও প্রতীকী অভ্যর্থনা

পুতিনকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল সামরিক কুচকাওয়াজ ও লাল গালিচা দিয়ে, যা কূটনৈতিকভাবে একটি মর্যাদার প্রতীক।

নিরাপত্তাব্যবস্থা

পুরো বেইসকে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হয়। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস ও রাশিয়ার এফএসও (Federal Protective Service) যৌথভাবে ভেতরের ও বাইরের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিটি আগত অতিথির জন্য তিন স্তরের স্ক্যানিং ব্যবস্থা রাখা হয়। ইলেকট্রনিক ড্রোন জ্যামার ব্যবহার করা হয় যেন আকাশপথে কোনো ড্রোন না ঢোকে।

ফ্রান্সে ম্যান্ডেলা মিতেরাঁ

১৯৯০ সালে কারাবন্দি জীবন কাটানোর পর মুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে নেলসন ম্যান্ডেলা ফ্রান্স সফরে যান। প্যারিসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক কেবল কূটনৈতিক সাক্ষাৎ ছিল না, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার আপার্থেইড-উত্তর সময়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রতীক।

নিরাপত্তাব্যবস্থা

প্যারিস শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় উচ্চ পর্যায়ের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বিমানবন্দর থেকে বৈঠকস্থল পর্যন্ত ম্যান্ডেলাকে কনভয় রক্ষা করা হয়েছিল, যাতে কোনো ধরনের হুমকি বা নিরাপত্তা লঙ্ঘন না ঘটে। বৈঠকের আগে ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থা (DGSE) এবং স্থানীয় পুলিশ যৌথভাবে অঞ্চলটি তল্লাশি করে। বৈঠকের স্থান ঘিরে চূড়ান্ত নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হয়Ñ ছাদে স্নাইপার, রাস্তায় পুলিশ এবং প্রতিটি ভবনে সিকিউরিটি চেক।

হামবুর্গে বিশ্বনেতারা

২০১৭ সালের জুলাইয়ে জার্মানির হামবুর্গে অনুষ্ঠিত হয় জি২০ সম্মেলন। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর এই বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানসহ শীর্ষ বিশ্বনেতারা। কিন্তু সম্মেলন যতটা আলোচিত হয়েছিল কূটনৈতিক কারণে, তার চেয়ে বেশি শিরোনামে আসে হামবুর্গের রাস্তায় সংঘটিত ব্যাপক বিক্ষোভ আর কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

বিক্ষোভের ঝড়

সম্মেলনের বিরুদ্ধে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। পরিবেশবাদী, মানবাধিকারকর্মী, পুঁজিবাদবিরোধী সংগঠনসহ নানা গোষ্ঠীর বিক্ষোভে শহর প্রায় অচল হয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রে ব্যারিকেড দেয়, গাড়ি ভাঙচুর করে, অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে হামবুর্গ রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। এই বিক্ষোভকে ইউরোপের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিবাদগুলোর একটি বলা হয়।

নিরাপত্তাব্যবস্থা

শহরজুড়ে মোতায়েন করা হয় ২০,০০০-এর বেশি পুলিশ সদস্য। জার্মান ফেডারেল পুলিশ, দাঙ্গা দমন ইউনিট ও বিশেষ বাহিনী একযোগে দায়িত্ব পালন করে। আকাশে টহল চালায় জার্মান যুদ্ধবিমান ও নজরদারি হেলিকপ্টার। শুধু সম্মেলন ভেন্যুই নয়, হামবুর্গ বন্দর, রেলস্টেশন, বিমানবন্দরÑ সব জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার ছিল। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়, রাস্তায় ছিল জলকামান সজ্জিত গাড়ি ও সাঁজোয়া যান। সম্মেলনকেন্দ্রকে ঘিরে তৈরি করা হয় ‘ব্লু জোন’ নামের কড়া নিরাপত্তাচক্র, যেখানে শুধু অনুমোদিত ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারত।

নিরাপত্তা বলয়ে মোড়ানো আরও কিছু বৈঠক

ক্যাম্প ডেভিডে সাদাত ও বেগিন

জিমি কার্টারের তত্ত্বাবধানে মিশরের আনোয়ার সাদাত ও ইসরায়েলের মেনাহেম বেগিন বৈঠক করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবকাশকেন্দ্র ক্যাম্প ডেভিডে। ঘন জঙ্গলের এই জায়গাকে প্রায় সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হয়। চারপাশে ছিল মেরিন কর্পস ও এফবিআইয়ের পাহারা। এর নিরাপত্তাব্যবস্থা এতটাই গোপন ছিল যে, বৈঠকটির বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয় অংশগ্রহণকারীদের।

স্লোভেনিয়ায় বুশ-পুতিন

জুন মাসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল ৯/১১-এর আগে মার্কিন-রাশিয়ার প্রথম উচ্চ পর্যায়ের মিটিং। বৈঠকের জন্য লিউব্লিয়ানার দুর্গঘেরা এলাকায় কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়। সড়ক পুরোপুরি বন্ধ, ছাদে স্নাইপার, রেডিও সিগন্যাল ব্লক করা হয়।

সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ঐতিহাসিক বৈঠক হয় সিঙ্গাপুরের সেন্টোসা দ্বীপে। দ্বীপটিকে ২৪ ঘণ্টার জন্য সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। মার্কিন ও সিঙ্গাপুরের নিরাপত্তা বাহিনী যৌথভাবে নজিরবিহীন নিরাপত্তা দেয়। বৈঠকের আগে দ্বীপে থাকা প্রতিটি হোটেল, দোকান, এমনকি রেস্তোরাঁ পর্যন্ত নিরাপত্তা পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছিল।

জেনেভায় রিগান ও গরবাচেভ

রোনাল্ড রিগান ও মিখাইল গরবাচেভ প্রথমবার মুখোমুখি হন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। জেনেভার লেকের ধারে ছিল ভিলা ফ্লরেন্টাইন, যেটি সম্পূর্ণভাবে ঘিরে রাখা হয়েছিল সেনা ও স্নাইপারের চাদরে। আকাশে ছিল হেলিকপ্টার টহল আর লেকের পানিতে নৌ পাহারা। এই বৈঠক ঠাণ্ডা যুদ্ধের ইতিহাসে বড় বাঁক তৈরি করে।

জেনেভায় বাইডেন-পুতিন

জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রথম বৈঠক হয়। ভিলা লা গ্রাঞ্জকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা জারি করা হয়। আকাশপথ নিয়ন্ত্রণ, সড়ক ব্লক, নদীপথে টহলÑ সবই একসঙ্গে চলছিল। পুলিশ, স্পেশাল ফোর্স, স্নাইপারÑ সব মিলে জেনেভা শহর হয়ে ওঠে নিরাপত্তার শহর।

শিকাগোতে ন্যাটো সামিট

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে বিশ্বের নজর ছিল এই সম্মেলনে। ৫০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি আসায় শিকাগো শহরকে প্রায় সামরিক ঘাঁটিতে রূপ দেওয়া হয়। রাস্তায় ছিল সাঁজোয়া যান, আকাশে যুদ্ধবিমান, বিক্ষোভকারীদের সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী।