গণঅভ্যুত্থানের তাৎপর্য বুঝতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার: সাইফুল হক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান একবিংশ শতাব্দীতে দুনিয়ার বুকে গণজাগরণ- গণপ্রতিরোধে এক মহাকাব্যিক উপাখ্যানের মতো। এই গণঅভ্যুত্থান বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে জনগণের অফুরন্ত শক্তির উদ্বোধন সূচিত করেছে। দুঃখজনক হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের তাৎপর্য বুঝতে পারেনি, একে কাজে লাগাতে পারেনি। এ কারণে ইতিমধ্যে পরিবর্তনের অমিত সম্ভাবনার অনেকটা বিনষ্ট হয়েছে। এখন চেষ্টা হবে আগামীতে এই সম্ভাবনার কতটা ধরে রাখা যায়।
আজ শনিবার টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, গণঅভ্যুত্থান অর্জন ধরে রাখার পরবর্তী গন্তব্য হচ্ছে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যাত্রা করা।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুল নিয়ে যাওয়া গুটি কয়েক নারী-পুরুষকে হেনস্তা করার মধ্যে কোনো গৌরব নেই। এসবের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন রক্ষা করা যাবে না। ইতিহাসের বিচার বড়ই নির্মম। জবরদস্তি করে কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে গেলে বা নাকচ করতে গেলে তা টেকসই হয় না, বরং তা অনেক ক্ষেত্রে তা বুমেরাং হয়।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারসমূহকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পুনর্বাসনের আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইটা দীর্ঘ ১৬ বছরের। এই আন্দোলনে ভাগ বিভক্তির কোনো অবকাশ নেই।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করতে ৯ মাস লেগেছে, আর এক বছরেও সংস্কারের আলোচনা শেষ হলো না। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
আলোচনা সভায় বহ্নিশিখা জামালী বলেন, গণঅভ্যুত্থানে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও গত এক বছরে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। রাজনৈতিকভাবে নারীবিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। নারীর অধিকার ও মর্যাদাবিরোধী সব তৎপরতা বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সভাপতি সাইফুর রেজা মামুনের সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, আনছার আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় সদস্য মাহমুদুল হাসান পিপলু, মীর রেজাউল আলম, স্থানীয় নেতা ওয়াহিদুজ্জামান মতি, আজাদ খান ভাসানী, আলী ঈমাম তপন, শফিউল আলম, নুরুজ্জামান, মাহমুদুল হক সানু, হেদায়েত আলী খান, খোরশেদ আলম, আমিনুল ইসলাম অনল, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী অভিভাবক শফিকুল ইসলাম, ফিরোজ খান, ছাত্রনেতা মুনসুর হেলাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা গোলাম রাজিব, শহীদুজ্জামান লাল মিয়া, সুমন খান মাহবুব প্রমুখ।
সভার শুরুতে গণঅভ্যুত্থানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দুই শহিদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফসহ শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।