ডিএনডি লেকে কিশোরের মরদেহ, ময়নাতদন্তে ‘হত্যার’ আলামত
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি লেকে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া মরদেহটি এসএসসি পাস করা মেধাবী কিশোর মো. ইয়াছিনের (১৭)। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং পানিতে ডুবে মৃত্যুর আলামত মেলেনি। ফলে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় ভাড়া বাসা থেকে বের হন ইয়াছিন। কিন্তু আর ফিরে আসেননি। বাসার কাছেই বেশ কয়েকটি ফার্মেসি থাকলেও তার মরদেহ পাওয়া যায় কয়েক কিলোমিটার দূরে পাইনাদী সিআইখোলা এলাকার লেকে। বুধবার সকালে স্থানীয়দের খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত ইয়াছিন সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তার বাবা সৌদি প্রবাসী। গত জুলাইয়ে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় ইয়াছিন জিপিএ-৪.৬২ পান। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে সবার ছোট।
ইয়াছিনের মামাতো ভাই মুনতাসির রহমান জিহাদ জানান, “হাতে ৫০ টাকা নিয়ে ওষুধ আনতে বের হয়েছিল ইয়াছিন। ১০ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু অনেক সময় পার হয়ে গেলেও সে ফেরেনি। রাত দুইটা পর্যন্ত তার ফোন চালু ছিল।”
নিখোঁজের পরদিন সকালে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোকাহত পরিবারের সদস্যরা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। নিহতের মামা মনসুর রহমান বলেন, “এর আগে রাগ করে বাসা থেকে বের হলেও নিজেই ফিরে এসেছে ইয়াছিন। কিন্তু এবার সে ডিএনডি লেকে কীভাবে গেল, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।”
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হায়দার আলী শিমুল বলেন, “নিহতের মাথা ও বুকে আঘাত পাওয়া গেছে। পানিতে ডুবে মৃত্যুর আলামত নেই। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে।”
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ওয়ালী সওদাগর জানান, বুধবার রাতে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। নিহতের মুঠোফোন পাওয়া যায়নি, পরনে ছিল এক পাটি জুতা। মরদেহ অন্তত ২৪ ঘণ্টা পানিতে ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। “হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকলেও তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে,” বলেন তিনি।