সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু, অ্যান্টিভেনম না দেওয়ার অভিযোগ
লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে বিষাক্ত সাপের কামড়ে আবদুল আলিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় শিশুটি মারা গেছে বলে তার মা মহিমা আক্তারের অভিযোগ। অ্যান্টিভেনিম দিলে আলিম বেঁচে যেতো বলে দাবি তার মায়ের।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কলচমা চৌকিদার বাড়িতে আলিমকে সাপে কামড় দেয়। সে একই বাড়ির আলমগীর হোসেনের ছেলে।
শিশুর মা মহিমা ও মামা রাছেল শেখ জানায়, মাদরাসা থেকে এসে আলিম ঘরের দরজায় বসে খেলা করছিল। হঠাৎ সে চিৎকার দিয়ে উঠে। চিৎকার শুনে তার মা এসে দেখেন একটি সাপ তাকে কামড় দিয়ে পাশে থাকা গর্তে ঢুকে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ফারজানা ইতি হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম নেই বলে মহিমাকে জানিয়ে দেন। পরে তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। কুমিল্লা নেওয়া পথেই শিশুটি মারা যায়।
শিশুটির মা মহিমা আক্তার বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম দিলে আমার ছেলেটা বেঁচে যেতো। কিন্তু অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় তাকে বাঁচানো যায়নি।’
শিশুর মামা মো. রাছেল শেখ বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম নাই, এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। মূল্যবান অ্যান্টিভেনম হয়তো রোগীদের না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
দায়িত্বরত চিকিৎসক ফারজানা ইতি বলেন, ‘১২টার পর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারছেন না তাকে সাপে কেটেছে, নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার রক্ত পরীক্ষা করে নেগেটিভ রেজাল্ট পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া শ্বাস প্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে, তারা শিশুটিকে অন্যত্র চিকিৎসা করানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। এতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ তাকে পাঠানো হয়। তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দেব না?’
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এরকম হওয়ার কথা না। আমাদের হাসপাতালে যে অ্যান্টিভেনম আছে, তা দিয়ে ৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে। অন্য কোথাও রোগীকে রেফার্ড করতে হলেও অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার্ড করতে হবে। কিন্তু কি কারনে ওই চিকিৎসক অ্যান্টিভেনম দেয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’