সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা দুর্নীতি করছেন: রাশেদ খাঁন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং একটি সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা দুর্নীতি করছেন। তারা আখের গোছাতে ব্যস্ত। ডিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে সব কিছুতেই দুর্নীতির ছোঁয়া লেগে আছে। ১৬ বছর বিএনপি-জামায়াতের তকমা লাগানো আমলারা এখনো নির্যাতিত ও পদ বঞ্চিত হচ্ছেন। চলমান সংস্কার, খুনিদের বিচার ও দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ড. ইউনূস সরকার হাসিনার পরামর্শে দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে দেশ থেকে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ হবে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুবিধাভোগীরা এখন টাকার বিনিময়ে সরকারের সুবিধা ভোগ করছেন। এটা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থী। ফ্যাসিবাদ আমলাদের প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে সরকার এক বছরেও দৃশ্যমান কোনো সংস্কার বা সফলতা দেখাতে পারেনি।’
রাশেদ খাঁন আরও বলেন, ‘চুনোপুঁটিদের নয়; খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, কামাল (আসাদুজ্জামান খান কামাল) ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। এ নিয়ে জাতি কোনো টালবাহানা সহ্য করবে না। প্রয়োজন হলে আরও ১০টি ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। টাকা না থাকলে জনগণ টাকা দেবে।’
এনসিপির সমালোচনা করে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘এই দলটি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এটা আমার কথা নয়, টিআইবি প্রধান তাদের কিংস পার্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাছাড়া এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা পদ নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। তারপরও হাসনাত আব্দুল্লাহরা ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করছেন। তাদেরও ভুল ভাঙতে বসেছে। যারা হাসিনার মতো স্বৈরশাসককে পরাজিত করতে পেরেছে, তারা আজ নানা কলংকের তিলক মাথায় নিচ্ছে। চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হচ্ছেন। মানুষ ও সমাজের কাছে এইসব বীরেরা হেয় হচ্ছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ছাত্রদের কলংকিত করল কারা? ১৬ বছর বিএনপি-জামায়াতের তকমা লাগানো আমলারা এখনো নির্যাতিত ও পদবঞ্চিত হচ্ছে।’
জুলাই সনদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যে সরকার শহিদদের তালিকা তৈরি করতে পারে না, তাদের কাছ থেকে জাতি কি আশা করতে পারে। জাতিসংঘের তদন্তে নিহতের সংখ্যা ১৪শ’ কিন্তু জুলাই সনদে সংখ্যা এক হাজার করা হল। এটা কেন এবং কীভাবে হলো?’
গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে মাঠে থাকা ও এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠে না থাকলে আওয়ামী লীগ মাঠ দখল করে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। ইতোমধ্যে তারা এমন ষড়যন্ত্র করে বসে আছে। তাই সবাই কোন না কোন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে। ১৪ দল ও জাতীয় পার্টি নানা ছুতোয় নির্বাচন করতে চাইবে। তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। কারণ তারাও হাসিনার উচ্ছিষ্টভোগী। ডামি, মামি বা যেকোন নামে তাদের নির্বাচন করার সুযোগ নেই। ১৪, ১৯ ও ২৪ সালে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের বিচার দাবি জানাই।’
ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, যুব অধিকারের সভাপতি রাকিবুল হাসান রকিব, যুবনেতা মো. মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদ মো. রায়হান হোসেন রিহান, মো. মাহাফুজ রহমান, মো. হালিম পারভেজ ও মো: নাহিদ হাসনানসহ আরও অনেকে।