মৌচাকে গাড়ির ভেতরে দুই লাশ /

নতুন যে তথ্য পাওয়া গেল

অনলাইন ডেস্ক
১২ আগস্ট ২০২৫, ১৩:০৪
শেয়ার :
নতুন যে তথ্য পাওয়া গেল

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পার্কিংয়ে রাখা একটি প্রাইভেট কার থেকে গতকাল সোমবার দুজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ না জানা গেলেও গাড়িটির মালিক সূত্রে তাদের পরিচয় পাওয়া গেছে।

নিহত দুজন হলেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে মোহাম্মদ মিজান ও একই উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের লটকরিয়া গ্রামের খামারবাড়ির আবু তাহেরের ছেলে জাকির হোসেন। এর মধ্যে জাকির প্রাইভেট কারটির চালক এবং মিজান তার বন্ধু।

তারা হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন এক শিশুকে নিতে নোয়াখালীর চাটখিল থেকে এসেছিলেন। নোয়াখালী থেকে আসার সময় তাদের সঙ্গে গাড়িটির মালিকও ছিলেন। তবে ঢাকায় কাজ শেষে তিনি বাসে করে নোয়াখালীতে ফিরে যান।

গাড়িটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, শনিবার রাতে তিনি তার স্ত্রীর বড় ভাইকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে ঢাকায় আসেন। এ সময় গাড়িতে জাকিরের সঙ্গে তার বন্ধু মিজানও উঠেন। মিজান প্রতিবেশী এক শিশুকে হাসপাতালটি থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন। স্ত্রীর বড় ভাইকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার পর রবিবার ভোরে বিমানবন্দর থেকে তারা গাড়ি নিয়ে মালিবাগ এলাকায় পৌঁছান। এরপর জাকির তাকে মালিবাগ থেকে নোয়াখালীর একটি বাসে তুলে দেন।

জোবায়ের আল মাহমুদ আরও বলেন, ‘বিদায় দেওয়ার সময় জাকির বলেছেন, বেলা ১১টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দেবে, ততক্ষণ তারা দুজন গাড়িতেই ঘুমাবেন। আমি পৌনে ১১টার দিকে জাকিরকে ফোন দিয়েও পাইনি। পরে রাত ৮টা পর্যন্ত আরও কয়েকবার ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আর ফোন ধরেনি।’

ফোন না ধরায় জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে গাড়িটির অবস্থান দেখেন জানিয়ে জোবায়ের বলেন, ‘যতবারই ট্র্যাক করছি, গাড়ি দেখি হাসপাতালের পার্কিংয়ে। উপায় না দেখে পরদিন জাকিরের নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন দিই। তিনিও ফোন ধরেননি। এরপর যাদের রোগী আনতে গেছেন, তারাও বেশ কয়েকবার ফোন দেন। কিন্তু মিজান-জাকিরের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।’

এর মধ্যেই গতকাল সোমবার বেলা ২টায় রমনা থানা থেকে পুলিশ তাকে ফোন দেয় বলে জানান গাড়ির মালিক জোবায়ের।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ জানায় গাড়িতে দুজনের লাশ পড়ে আছে, দ্রুত ঢাকায় যেতে। আমি দুজনের পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিই।’

তিন মাস ধরে জাকির তার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে জানান জোবায়ের।

এদিকে উদ্ধারের পর লাশ দুটি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়। আজ বেলা ১১টার দিকে লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল।

জানা গেছে, তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মিজান ছিলেন সবার বড়। ড্রেজার (খননযন্ত্র) চালিয়ে ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন মিজান। তিনি অবিবাহিত।