সিনহা হত্যায় ওসি প্রদীপের ফাঁসির তারিখ ঘোষণার দাবিতে আলটিমেটাম
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি কার্যকরের তারিখ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণার আলটিমেটাম দিয়েছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ।
তিনি বলেন, মেজর (অব.) সিনহা হত্যার রায় সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করলেও রায়ের কপি এখনো কোর্ট থেকে দেওয়া হয় নাই। রায়ের লিখিত কপি না দেওয়ায় আজ পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের তারিখ প্রকাশ করা হয়নি। এটি শুধু বিলম্ব নয়, এটি ন্যায়বিচারের অবমাননা, শহিদের আত্মার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং জাতির সঙ্গে প্রহসন। প্রদীপের মতো একজন দাগি খুনির শাস্তি কার্যকরে এই দীর্ঘসূত্রতা কী বার্তা দিচ্ছে? রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক ছত্রচ্ছায়ায় কি অপরাধীরা বিচার এড়িয়ে যেতে পারে? ”
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
সাইফুল্লাহ খান সাইফ বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, এই বিলম্ব আর মেনে নেওয়া হবে না। সরকারের কাছে আমাদের চূড়ান্ত দাবি, প্রদীপের ফাঁসির কার্যকরের নির্দিষ্ট তারিখ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।’
সংগঠনের আহ্বায়ক লেফটেন্যান্ট কমোডর (অব.) মেহেদী হাসান বলেন, ‘সরকার কেন এই বিচার কার্যকর করছে না, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমাদের মনে হচ্ছে, আন্তর্জাতিক চাপে সরকার রায় বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে। হাইকোর্ট রায় টাইপ করতে দুই মাস সময় নিচ্ছে। এটা কি দায়বদ্ধতার পরিচয়? আমরা মনে করি, সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
উল্লেখ্য, প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা। ওই মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব; কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।
চলতি বছরে ২ জুন তাদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট।