ট্রাম্প-পুতিনকে কড়া বার্তা ইউরোপের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১১ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ট্রাম্প-পুতিনকে কড়া বার্তা ইউরোপের

ক্ষমতাগ্রহণের ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ই ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন- বলে রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০ দিন পেরিয়ে গেলেও সেই যুদ্ধ থামেনি। বহুভাবে তিনি রাশিয়াকে থামানোর চেষ্টা করেছেন। সর্বশেষ তিনি শান্তি আলোচনার জন্য আলাস্কায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। অথচ সেই আলোচনায় যুদ্ধাক্রান্ত ইউক্রেনকেই রাখা হচ্ছে না। এ নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা। ট্রাম্প ও পুতিনের উদ্দেশে তারা বলেছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো আলোচনাতেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মিত্রদের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে রুশ বাহিনী। এই যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের। তবে পুতিনের দাবি- ইউক্রেনের মাটি ব্যবহার করে পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠেছিল। এই অভিযোগে ওই বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন তিনি।

এই যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আগামী শুক্রবার শীর্ষ বৈঠক করবেন। এ নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, সম্ভাব্য চুক্তিতে ইউক্রেনকে তার ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হতে পারে। এ উদ্বেগ থেকে ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পের প্রতি রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের পথ খুঁজতে শুক্রবার আলাস্কায় বৈঠক হবে। ট্রাম্প ও পুতিনের সঙ্গে ওই বৈঠকে যোগ দিতে চাইছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন ও ইউরোপের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছেÑ কিয়েভকে অবশ্যই আলোচনার অংশ করতে হবে।

পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের ঘোষণা দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেছেন, ‘উভয় পক্ষের মঙ্গলের জন্য কিছু ভূখণ্ড অদলবদল করতে হবে।’ কিন্তু জেলেনস্কি জোরালো সুরে বলে দিয়েছেনÑ ‘ইউক্রেনীয়রা দখলদারের কাছে নিজেদের ভূমি দেবে না। আমাদের স্বার্থবিরোধী যে কোনো সিদ্ধান্ত, আর ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে নেওয়া যে কোনো সিদ্ধান্ত হবে শান্তির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ফোনালাপে জেলেনস্কি ইউক্রেনের মিত্রদের প্রতি টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘স্পষ্ট পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, সক্রিয় কূটনীতি, ইউক্রেনকে সহায়তা ও রুশ ফেডারেশনের ওপর চাপ সৃষ্টিÑ এ তিনটিকে মিলিয়ে একটি যৌথ পদ্ধতিই শুধু রাশিয়ার অবৈধ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সফল হতে পারে।

ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এ যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।