অগ্নিকাণ্ডের পর পুনরায় খুলল স্পেনের ঐতিহাসিক মসজিদ-ক্যাথেড্রাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১০ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩৬
শেয়ার :
অগ্নিকাণ্ডের পর পুনরায় খুলল স্পেনের ঐতিহাসিক মসজিদ-ক্যাথেড্রাল

অগ্নিকাণ্ডের পর সর্বসাধারণের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে স্পেনের কর্ডোভায় অবস্থিত ঐতিহাসিক মসজিদ ক্যাথেড্রাল। এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটিতে গত শুক্রবার রাতে লাগা আগুনে সামান্য ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগরীর মেয়র। শনিবার আবার মসজিদটি খুলে দেওয়া হয়েছে। 

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এর ধোঁয়া ও শিখা নির্গত হতে দেখা যায়। প্রায় ২০ লাখ দর্শনার্থী প্রতি বছর এই ইসলামি স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শনটি পরিদর্শন করেন।

মেয়র হোসে মারিয়া বেলিদো স্প্যানিশ পাবলিক টেলিভিশনের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে জানান, অগ্নিকাণ্ডে পুরো মসজিদ ক্যাথেড্রাল ধ্বংস করে দিতে পারত। তবে ক্ষতি মূলত একটি অংশে সীমাবদ্ধ ছিল। যেখানে ছাদটি আগুন ও পানি ঢালার কারণে সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে। পাশাপাশি দুটি অংশে ধোঁয়ার কারণে অলংকৃত বেদি ও শিল্পকর্মে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান প্রায় ৫০-৬০ বর্গমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই স্থাপনায় একটি যান্ত্রিক ঝাড়ু মেশিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।  

শনিবার ঘটনাস্থলে থাকা এক আলোকচিত্রী জানান, ভবনটি দেখার জন্য যখন মানুষ জড়ো হচ্ছিল, তখন একাধিক অগ্নিনির্বাপক যান ও পুলিশ ভবনের পাশের সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। ‘আলমানজর নেভ’ নামে পরিচিত অংশটি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কোমর উচ্চতার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল।

কর্দোভার দমকল বিভাগের প্রধান ড্যানিয়েল মুনিওজ জানান, দমকলকর্মীদের তৎপরতায় এমন বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভভ হয়েছে। আগুন নেভাতে ৩৫ জন দমকলকর্মী রাতভর কাজ করেন। তিনি আরও জানান, ২০০১ সালে শেষবার অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ভবনটিতে প্রতিবছর অগ্নিনির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এবার আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের সহায়তা করেছে। এই মহড়ার ফলে তারা ভবনের সব প্রবেশদ্বার, করিডোর এবং কোথায় তাদের পাইপ সংযুক্ত করতে হবে সবই তারা ভালোভাবে জানত।

৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে দক্ষিণ স্পেনের তখনকার মুসলিম শাসক উমায়্যাদ শাসক আবদ আর-রহমান এই স্থানটিতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৩শ শতাব্দীতে ক্যাস্টিলের কিং ফেরদিনান্দ তৃতীয়ের অধীনে খ্রিস্টানরা স্পেন পুনরায় দখল করার পর এটি ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত হয় এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে আর্কিটেকচারাল পরিবর্তন করা হয়। ১৯৮৪ সালে ইউনেস্কো এই ভবনটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে। এখন শুধু খ্রিস্টানরা সেখানে উপাসনা করলেও মসজিদ হিসেবে এর ঐতিহাসিক পরিচিতি রয়েছে।