‘স্বৈরাচারী সরকার শিল্পের উন্নয়নে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়নি’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারী সরকার কখনোই এই শিল্পের উন্নয়নে অর্থনৈতিক প্রণোদনা বা প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়নি।
আজ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের কামদেবপুর গ্রাম পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় বহু প্রজন্ম ধরে অসংখ্য পরিবার ঐতিহ্যবাহী “শীতল পাটি” তৈরির সাথে জড়িত। এক সময় এই সূক্ষ্ম হস্তশিল্প পণ্য এই অঞ্চলের অর্থনীতির গর্ব ছিল, কিন্তু দারিদ্র্য, বাজারে প্রবেশাধিকারের সংকট এবং সরকারের দীর্ঘদিনের অবহেলার ফলে এই শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।
ড. হায়দার স্থানীয় কারিগরদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশা ও স্বপ্নের কথা শোনেন। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের কারিগরদের হাতে অপরিসীম দক্ষতা রয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র সঠিক সহায়তা ও বাজার না থাকায় তাদের পণ্য আজ বাজার থেকে হারিয়ে গেছে।”
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এই অবস্থা পাল্টানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ড. হায়দার জানান, বিএনপি ক্ষমতায় এসে সমগ্র বাংলাদেশে শীতল পাটির মতো ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পগুলোকে বাঁচাতে এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাজারের সাথে এসব কারিগরদের সংযুক্ত করার জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করবে। “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে – কারিগরেরা যাতে শুধুমাত্র সরকারী সহায়তা অভাব ও অব্যবস্থাপনার কারণে বেকার না থাকে। আমরা তাদের সৃষ্টিশীলতার যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করবো,” বলেন তিনি। বিএনপি’র পরিকল্পনায় থাকছে: কারিগর পরিবারের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও মাইক্রো-ফিন্যান্স সুবিধা; পণ্যের গুণগতমান উন্নয়ন ও ডিজাইনে নতুনত্ব আনতে কারিগরদের প্রশিক্ষণ প্রদান; ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সমবায় ভিত্তিক বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা; ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে হাজার হাজার পরিবার আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে, গ্রামীণ অর্থনীতি হবে গতিশীল এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করবে। ড. হায়দার আরও বলেন, “শীতল পাটি আবারও ঝালকাঠির ঘর ও জাতীয় পরিচয়ের অংশ হবে, এবং বিশ্ববাজারে আমাদের ঐতিহ্য ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।”
বিএনপি বিশ্বাস করে যে, গ্রামীণ হস্তশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা “People First” বা “মানুষ আগে” উন্নয়ন দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সাধারণ মানুষের মেধা, পরিশ্রম ও উদ্যোগের উপর ভিত্তি করে সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।