চাঁদাবাজির মামলা /

যুবদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মারুফ গ্রেপ্তার

পিরোজপুর প্রতিনিধি
০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৯
শেয়ার :
যুবদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মারুফ গ্রেপ্তার

পিরোজপুর জেলা যুবদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মারুফ হাসান ওরফে মারুফ পোদ্দারকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের বাজারের নিজস্ব মালিকানাধীন আবাসিক বিলাস হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

পিরোজপুর সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগে শুক্রবার চাঁদাবাজির অভিযোগে জুয়েল শেখ নামে এক বালু ব্যবসায়ী মারুফসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথটিম অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তারের পর থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মারুফ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। এ ঘটনায় কেন্দ্রের নির্দেশে মারুফকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এতেও দমে না গিয়ে তিনি নিয়মিত চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। 

এদিকে মারুফ কিছুদিন ধরে জুয়েল এবং তার ব্যবসায়িক সহযোগী রিপনের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন । এছড়া ব্যবসা করতে হলে প্রতি মাসে নিয়মিত তাদের কাছে আরও ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে হুমকি দেন তিনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাদেরকে মারধর ও খুন জখমের হুমকিও দিয়ে আসছিলেন মারুফ। জুয়েল বিষয়টি বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় লোকজনদের জানালে মারুফ তাদের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন।

পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার দুপুরে মারুফের নেতৃত্বে মিরন ও মিলন নামের ২ যুবকসহ অজ্ঞাতানামা আরও ২-৩ জন চাইনিজ কুড়াল, দা, লাঠি, হকস্টিক, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ বলেশ্বর ব্রিজ সংলগ্ন জুয়েলের মালিকানাধীন মেসার্স রুমু এন্টারপ্রাইজ অফিসের সামনে তাদের দুইজনের কাছে পূর্বের দাবিকৃত ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন মারুফ। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি হকস্টিক দিয়ে জুয়ে়লকে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করেন। এ সময় তার ব্যবসায়িক সহযোগী রিপন তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে মারুফ, মিরন ও মিলনসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকেও এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারেন এবং লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। পরে জুয়েল ও রিপনকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আটক রেখে বাড়ি থেকে দাবিকৃত চাঁদা আনার জন্য চাপ দেন। তখন জুয়েলের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ভয়ভীতিসহ খুন জখমের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এছাড়া দাবিকৃত চাঁদা না দিলে জুয়েলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে দিবে না বলেও হুমকি দেন মারুফ। 

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগষ্টের সরকার পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমকি প্রদর্শন ও ভয়ভিতী দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে পিরোজপুর থেকে কেন্দ্রে অভিযোগ দিলে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম নয়নের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২৪ সালের ১০ আগষ্ট রাতে এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃ্খংলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাদের দলীয় পদসহ দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে মারুফসহ আরও ৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

অপর বহিস্কৃতরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ বদিউজ্জামান রুবেল, যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াজ শিকদার ও জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শামিম হাওলাদার।