অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

জবি প্রতিনিধি
০৭ আগস্ট ২০২৫, ২১:৪৭
শেয়ার :
অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণার দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেছেন, ‘এই ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তী সরকার) ভেঙে দিয়ে আপনি প্রধান হয়ে তত্ত্বাবধয়ক সরকার ঘোষণা করেন। আপনি কিছু বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেন। সেই বিপ্লবী সিদ্ধান্তের মধ্যে আপনি এক নম্বরে বলেন, যে ক্ষমতায় আসবে ওয়াদা করতে হবে বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

হাদি বলেন, যে বাহাত্তরের সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাকশাল হয়েছে, বিচারিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে; সেই সংবিধানকে নতুন সংসদে বাতিল করে, জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের আলোকে এবং জুলাই সনদের আলোকে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে।

ড. ইউনূসের কাছে দাবি তুলে ধরে হাদি বলেন, ‘আপনাকে প্রতিনিধিত্বশীল স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে। এটাতে যদি ১০ জনের মেম্বার হয়; দুজন বিরোধী দল থেকে থাকবে, দুজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক থাকবে, একজন শহীদ পরিবার থেকে থাকতে পারে, এই পুরো সরকার থেকে পাঁচজন থাকবে, বাকি পাঁচজন থাকবে অন্য স্টেক থেকে। যদি সেটা হয় তাহলে নূন্যতম তাকে কন্ট্রোল করা যাবে।’

তিনি দাবি করেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার করতে হবে। সব কিছুতে একমাত্র বিসিএস প্রশাসন ছড়ি ঘুরাবে তা হতে পারে না। আপনি ক্ষমতার ডিসেন্ট্রালাইজেশন (বিকেন্দ্রীকরণ) করেন। আপনি পুলিশকে একটু ভিন্ন করেন। আপনি অন্য ক্যাডারগুলোকে আরেকটু এমপাওয়ার করেন। এই যে প্রশাসকরা নিজেদেরকে প্যারালাল রাষ্ট্র ভাবে, আপনি এটা ভেঙে দিতে না পারলে আবার সে আমলাতান্ত্রিক দেশ হয়ে যাবে।’

জুডিশিয়াল রিফর্ম ও নির্বাচন কমিশনের বর্তমান প্যাটার্ন ভেঙে দেওয়ার দাবিও জানান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদে সাত চল্লিশকে বাদ দিয়ে, এই অঞ্চলের ২০০ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামকে বাদ দিয়ে মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদের বয়ান রাখা হয়েছে। শাহবাগের জঘন্যতম মত দিয়ে এই বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে আমাদের দেশে বিচারিক হত্যাকাণ্ডকে সবথেকে বড় লেজিটিমিসি দেওয়া হয়েছে।’

সাতচল্লিশ, একাত্তর আর চব্বিশকে মুখোমুখি দাঁড় করানো বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে হাদি বলেন, ‘সাতচল্লিশের ধারাবাহিকতা হলো একাত্তর আর একাত্তরের চূড়ান্ত ধারাবাহিকতা আমাদের ২০২৪। সুতরাং সাতচল্লিশ, একাত্তর আর চব্বিশকে একটার বিপরীতে আরেকটা দাঁড় করানোর চেষ্টা বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র।’

জুলাই ঘোষণাপত্রে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যার কথা উল্লেখ না করার সমালোচনা করে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে হাদি বলেন, ‘আপনি বললেন ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বরের কথা। আপনি বললেন নব্বইয়ের অভ্যুত্থানের কথা। কিন্তু আপনি পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যার কথা বলেন না। আপনি এতটুকু ঠিক কোন রাজনীতির কারণে বাদ দিলেন? এসব বাদ দিয়ে আপনি কোন ফ্যাসিস্ট আবার আনতে চান? আপনাদের এত হীনমন্যতা কিসের? শাপলাই হীনমন্যতা, পিলখানায় হীনমন্যতা; তাহলে তাদের রক্তের বিনিময়ে যে সরকারে আছেন সেখানে থাকতে আপনাদের লজ্জা করে না?’