ছাত্রদল-যুবদল নেতার মারামারি, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আহত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৫
শেয়ার :
ছাত্রদল-যুবদল নেতার মারামারি, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আহত

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার রুমের ভেতরে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ নিয়ে উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। 

গতকাল বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার রুমের ভেতরে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

প্রথমে উপজেলাজুড়ে খবর চাউর হয়েছিল হাসপাতালের টেন্ডার নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, টেন্ডারের বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেনি। 

তবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মির্জা রিয়াদ হাসানের রুমের ভেতরে তার উপস্থিতিতে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা কাটাকাটি করছেন তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল আহমদ ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় ভিডিও করা নিয়ে বাধা দেওয়া, একে অন্যকে হুমকি প্রদান ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। 

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমের হামলায় জখম হয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান রাসেল। এ সময় জাহাঙ্গীর আলমও সামান্য আহত হয়েছেন। তবে আবুল হাসান রাসেলের মাথার আঘাত ও জখম বেশি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গতকাল বিকেলেই সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান রাসেলের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তার বাবা এমরান হোসেন বলেন, ‘আমি ময়নসিংহে আছি। রাসেলের মাথায় আঘাত পাওয়ার খবর পেয়েছি, তবে কিভাবে বা কেন আঘাত পেয়েছে আমি জানি না।’

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসান রাসেলের পক্ষের উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তোজাম্মেল হক নাসরুম বলেন, ‘আমি হাসপাতালের ভেতরে ছিলাম না, পরে গিয়েছি। আমরা জাহাঙ্গীর আলমকে আঘাত করিনি। সামান্য বিষয় নিয়ে জাহাঙ্গীর ও রাসেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। কোনো মারামারি হয়নি। কিভাবে যে, রাসেল মাথায় আঘাত লেগেছে জানি না। চাঁদাবাজি নিয়ে কোনো ঘটনা ঘটেনি বা এসব নিয়ে কোনো কথা হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য। গিয়ে শুনি কর্মকর্তার রুমে বসে চাঁদাবাজি বিষয় নিয়ে রাসেল কথাবার্তা বলছে। তখন আমি মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করি। এ সময় রাসেল, নাসরুম, মিজান ও জাহাঙ্গীর চাঁদাবাজির কথাবার্তা মোবাইলে রেকর্ড করতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে তারা আমার ওপর আক্রমণ চালান। তখন হয়তো ঠেলা ধাক্কায় রাসেল পড়ে গিয়ে আঘাত পেতে পারেন। তাদের আক্রমনে আমি সামান্য আহত হয়েছি। মাথায় ব্যথা পেয়েছি এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।’

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান বলেন,‘হাসপাতালের খাবার সরবরাহের টেন্ডার প্রক্রিয়া গত ২ তারিখ সম্পন্ন হয়েছে। ফাতেমা নামের ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র পেয়েছে। গতকাল সকালে হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে প্রথমে হাসপাতালের ভেতরে জাহাঙ্গীর আলম ও রাসেল আহমদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজি কথাবার্তা বা চাঁদা চাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাসেলের দাবি ছিল, হাসপাতালের সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম ভিডিও ধারণ করছিলেন। এ নিয়ে দুই জনের প্রথমে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে হাসপাতালের গেটের সামনে দুই জনের মধ্যে মারামারি হয়। রাসেল আহমদের মাথায় জখম হয়েছে, হাসপাতালে প্রাথমিক সেবা দিয়ে আমরা সুনামগঞ্জে প্রেরণ করেছি। জাহাঙ্গীর আলমও কিছু আঘাত পেয়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’