পুতিনের ঘরে ট্রাম্পের দূত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৭ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
পুতিনের ঘরে ট্রাম্পের দূত

কয়েকদিন থেকেই রুশ-মার্কিন সম্পর্কে আকস্মিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার কাছে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, স্নায়ুযুদ্ধকালীন উত্তেজনা আবার ফিরে এসেছে। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে রাশিয়াকে ১০ দিনের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প, যা আগামীকাল শুক্রবার শেষ হবে। তার আগেই গতকাল বুধবার ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। খবর বিবিসির।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কর্মকর্তা ইউরি উশাকফ বলেছেন, তাদের (পুতিন-উইটকফ) তিন ঘণ্টার বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে মস্কোর অবস্থান উইটকফের কাছে প্রেরণ করেছেন পুতিন, অন্যদিকে উইটকফের কাছ থেকে ‘মার্কিন সংকেত’ এসেছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বৈঠকের প্রতিবেদন উইটকফ ট্রাম্পকে অবহিত করার পর এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য মস্কোকে চাপ দেন ট্রাম্প। প্রথমে তিনি ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। পরবর্তী সময় তা কমিয়ে ১০ দিন করেন। এই সময়ের মধ্যে মস্কো যদি কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি না করে তাহলে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প।

পুতিন-উইটকফের যে ছবিগুলো সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে দেখা যায়, দুজনই হাসিমুখে করমর্দন করছেন। তারপরও বিশ্লেষকদের ধারণাÑ শুক্রবারের মধ্যে দুপক্ষের মধ্যে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অন্যদিকে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপকমাত্রায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।

এর আগে জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি চাইলে এক দিনের মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু আট মাস পরও এ বিষয়ে তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি। বরং জুলাই মাসে রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এদিকে গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির ওপর আক্রমণ বন্ধে বুধবার রাশিয়ার ওপর চাপ বৃদ্ধি করার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের মস্কো সফরকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জি৭-এর অস্ত্রাগারের সব শক্তি বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে করে অবিলম্বে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।’ তিনি আরও জানান, ইউক্রেন রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির আন্তরিকতা সম্পর্কে অবগত আছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ যারা আমাদের সাহায্য করছে, আমাদের সেসব অংশীদার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে।

জেলেনস্কি মনে করেন, রাশিয়ার অর্থনীতি চাপে না পড়া পর্যন্ত তারা শান্তির বিষয়ে গুরুত্ব দেবে না। তিনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং রুশ জ্বালানি কেনা দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের হুমকিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর আগে তুরস্কের ইস্তানবুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে তিন দফা শান্তি আলোচনা হলেও যুদ্ধ বন্ধের কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাশিয়ার সামরিক ও রাজনৈতিক শর্তগুলো কিইভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে এখনো ‘অগ্রহণযোগ্য’।