হত্যাচেষ্টার মামলায় বিএনপি-যুবদলের ৩ নেতা গ্রেপ্তার
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিএনপি ও যুবদলের ৩ নেতাকে কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মির্জাগঞ্জ বিএনপির সদস্য জনি মুন্সী (৩৬), উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌস হাসান সৌরভ মুন্সী (৩৫) ও জাহিদ হাসান পরাগ মুন্সী (৪০)।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে শত্রুতার জেরে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বিএনপি ও যুবদলের কর্মীদের হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সিয়াম রহমান হিমেলসহ ৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক সিয়াম রহমান হিমেল গতকাল রাতে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
সিয়াম রহমান হিমেল বলেন, ‘গতবছর গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর উপজেলা বিএনপির সদস্য জনি মুন্সী তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আমাকে মালিকানার অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিলে আমি রাজি হইনি। এর পর থেকে তার একান্ত সহযোগী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেজান জাকির ও তার সহোযোগীরা গত ৬-৭ মাস ধরে আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি -ধমকি দিয়ে আসছিল। হুমকি -ধমকির বিষয়টি আমি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছে। এছাড়াও মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দেওয়ার পর সেজান জাকিরসহ অন্যান্যরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল বিকেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে উপজেলা বিএনপির আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি উপজেলা সদর সুবিদখালী বাজার ব্রিজ অতিক্রম করার সময় সেজান জাকিরসহ ৭/৮ জন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায় ও আমাকে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আমাকে বাঁচাতে কয়েকজন এগিয়ে আসলে তাদের ওপরও হামলা চালালে আরও ৪ জন আহত হয়। আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তারা পুনরায় হামলা চালাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাসপাতালের সামনে মহড়া দেয়।’
এ ঘটনায় সিয়াম রহমান হিমেল বাদী হয়ে পরাগ মুন্সীকে প্রধান আসামি এবং সৌরভ মুন্সী ও জনি মুন্সীসহ ৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
সেনাবাহিনী ক্যাম্প থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মির্জাগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম এবং মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করার জন্য মির্জাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়। পরে উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সাংবাদিক সিয়াম রহমান হিমেল বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ মামলার প্রধান আসামি জাহিদ হাসান ওরফে পরাগ মুন্সীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ৩ জনকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।