বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছে, ফাইনাল খেলেছে জনগণ: ডা. তাহের
আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পেরেছে, জনগণ ফাইনাল খেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। আজ সোমবার রাজধানীর শাহবাগে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘গত ১৫–১৬ বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগ্রাম করেছে, ত্যাগও দিয়েছে। কিন্তু তারা সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পেরেছে, ফাইনাল খেলেছে জনগণ। নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। এটাই আন্দোলনের প্রকৃত রূপ—সামষ্টিক অংশগ্রহণ।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে অনেক আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু এই আন্দোলনের আলাদা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—এখানে সবাই অংশ নিয়েছে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স তো ছিলই, এমনকি হাসপাতালের রোগীরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। শিশুরাও রাস্তায় নেমেছে। একদিন দেখেছি, একজন মা কোলে শিশু নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। এই বিপ্লবে তাই সবার অংশগ্রহণ রয়েছে। এরকম সর্বজনীন অংশগ্রহণ এই দেশের ইতিহাসে বিরল।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ২২ জুলাই তিনি গ্রেপ্তার হন এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে কারামুক্ত হন। মুক্তির পর আহতদের দেখতে গিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে দেখেছেন, অর্ধেকের বেশি আহত মানুষ রিক্সাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা, ফেরিওয়ালা। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের অবদানকে সামনে আনা হচ্ছে না বলেও মনে করেন এ নেতা। এ ছাড়া ডাক্তারদের অবদানও গুরুত্ব পাচ্ছে না, অথচ ইতিহাসে সবার অবদান স্বীকৃতি পেতে হবে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘কিছু দল বলছে, ‘‘আমরা সব সংস্কার মানি, সাইন করে দিতেও সমস্যা নেই’’। মনে হয় তারা খুব সংস্কারপন্থী, খুবই ভালো মানুষ। কিন্তু এরপরই বলছে, এটাকে আইনগত ভিত্তি দিতে হবে না। তাহলে তো তাদের বক্তব্য দাঁড়ায়—‘‘আমি সালিশ মানি, কিন্তু তালগাছ আমার’’। একদিকে ওয়াদা করবে, আবার বলবে—‘‘ওয়াদা ভঙ্গ করব না।’’ অথচ কার্যকর করার জন্য যে আইনগত কাঠামো দরকার, সেটি মানতে রাজি নয়।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, ‘সংস্কারের আইনি ভিত্তি না থাকলে বাস্তবায়ন অসম্ভব। আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি। তাই শুধু স্বীকৃতিই যথেষ্ট নয়। পঙ্গুদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, বঞ্চিতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এবং সবচেয়ে জরুরি হলো—এত বড় আন্দোলনের চূড়ান্ত অর্জন যেন বাস্তবে বাস্তবায়িত হয়।’