দানবের কবর
১৭ জুলাই ২০২৪। রাত ৯টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের হল খালি করে দিয়ে হাসিনা ভেবেছিল, এতে বুঝি আন্দোলন দমে যাবে। কিন্তু বিধি বাম। ঢাকার উত্তরের মুখ থেকে বসুন্ধরা হয়ে তেজগাঁও মেসে মেসে থাকা বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের শত-শত ছেলেমেয়ে রাস্তায় নেমে আসে। আমরা জানতাম, সরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের হল বন্ধ করে দেওয়া হাসিনা ভাবতেই পারবে না যে, বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা রাতে রাস্তায় নেমে স্বৈরাচার-স্বৈরাচার ধ্বনিতে প্রকম্পিত করবে এলাকা।
১৭ তারিখ রাতেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথম ধাক্কাটা দেয় হাসিনাকে। জুলাইয়ের তপ্ত দুপুরে গুলিবর্ষণের নিচে দাঁড়িয়ে আমরা বুঝে যাই- সরকারি চাকরির কয়েকটা সিটের হিসেব লাশ দিয়ে মেটাতে হয় না। আমরা দেখলাম, গুলি চলে। শুধু যে প্রাণটা লাশ হয়ে সরে যায়, বাকিরা আর সরে না। আমরা দেখি এক স্বৈরাচারের নৃশংসতম রূপ। আমরা বুঝে যাই, এই ভোটবিহীন দানব ভয় পায় মানুষকে, মানুষের জমায়েতকে, মানুষের ন্যায্য দাবিকে। তাই ষোলোটা বছর ধরে সে গুম করে শত-শত প্রাণ; খুন হয়ে সংখ্যা হয়ে গেল হাজার হাজার।
আমাদের এই ৩৬ জুলাই নিয়ে ৩৬ প্রকার গল্প তৈরি হতে পারে। কারণ এই যুদ্ধে, এখানে আমরা ৩৬ মতের মানুষ ছিলাম। তবে জুলাই নৃশংসতার রূপ সবার কাছে এক ও অভিন্ন- এক স্বৈরাচারের রক্তখেকো রূপ। দেড় দশক ধরে চলা গণতন্ত্রহীনতাই সেইফ করেছে এ দানবকে। জনগণের ভোট গুনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকলে কেউ দুঃসাহস দেখায় না। সত্যিকার অর্থে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যদি আমরা কায়েম করতে পারি, আমরা কবর দিতে পারব এই দানবকে। দানবের কবর তো আমাদের জুলাইয়ের দায়। া