হত্যাকারীদের ফাঁসি চায় শহীদ সাগরের পরিবার

মো. জহিরুল ইসলাম সবুজ, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)
০৪ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
হত্যাকারীদের ফাঁসি চায় শহীদ সাগরের পরিবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর দুই মাস আগে গত বছরের মে মাসে কাজের উদ্দেশে বরিশালের আগৈলঝাড়া থেকে ঢাকায় যান সাগর হাওলাদার (১৭)। সংসারে সচ্ছলতা আনতে এবং বোনের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে কাজ নেন ধানমন্ডি লেকপাড়ের একটি চায়ের দোকানে। স্বপ্ন ছিল টাকা জমিয়ে বিদেশ যাবেন। কিন্তু অকালেই ঝরে গেল তার সব স্বপ্ন।

১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের পুলিশ বক্সের কাছে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন সাগর। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৪ জুলাই শহীদ হন তিনি। তার মৃত্যুতে থমকে যায় পরিবারটির সব স্বপ্ন। সাগরকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চান পরিবারের সদস্যরা।

আগৈলঝাড়ার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা গ্রামের কিশোর সাগরের বাবা নুরুল হক হাওলাদার বাগধা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী। মা আম্বিয়া বেগম গৃহিণী। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাগর বড়। তার ছোট বোন মরিয়ম খানম স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলের এমন মৃত্যু যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না মা আম্বিয়া বেগম। প্রতিদিনই কবরের পাশে গিয়ে অঝোরে কাঁদেন।

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা নুরুল হক হাওলাদার। সাগরের ছোট বোন মরিয়ম খানম ভাইয়ের কথা মনে করে বাড়ির এককোনে চুপচাপ বসে থাকে। বৃদ্ধ দাদা আ. মজিদ হাওলাদারও (৭৫) বাড়ির উঠানে বসে চোখের পানিতে বুক ভাসান। সাগরের মৃত্যুর এক বছর পার হলেও শোক কাটিয়ে উঠতে পারছে না পরিবার।

শহীদ সাগরের চাচা মইনুল হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের মে মাসে সাগর ঢাকায় গিয়েছিল। ওর স্বপ্ন ছিল বিদেশ গিয়ে সংসারের হাল ধরবে। ছোট বোনের পড়ার খরচ জোগাবে। বেশি টাকা আয় করে বাড়িতে পাকা ভবন তৈরি করবে। সাগরের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। যারা সাগরকে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চান মইনুল হোসেন।