দায়িত্বে নজরুল ইসলাম খান /
বিক্ষিপ্তভাবে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আবেদন নয়
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইস্যুতে ব্যক্তি উদ্যোগে বিএনপির কোনো নেতা নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে পারবেন না। যদি কারও কোনো বক্তব্য থাকে দলকে আগে জানাতে বলা হয়েছে। এজন্য দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে (ভার্চুয়ালি) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বাদশ সংসদের আড়াই শতাধিক আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বুধবার সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। খসড়ায় বাকি আসনগুলোতে ছোটখাটো পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। এই ইস্যুতেই স্থায়ী কমিটি বৈঠক আহ্বান করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ইসি খসড়া প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কোথাও কোথাও আবেদন করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
স্থায়ী কমিটির নেতারা মনে করেন, এভাবে চলতে থাকলে নিজেদের মধ্যে সংঘাতও হতে পারে। এই পরিস্থিতি এড়াতে দলের যার যে বক্তব্য তা কেন্দ্রীয়ভাবে শোনা হবে। এজন্য দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে দলের যার যে বক্তব্য নজরুল ইসলাম খানকে জানাবেন। তিনি সবার কথা শোনার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, ইসির সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, যেসব এলাকায় সংসদীয় সীমানা পুননির্ধারণের ব্যাপারটি ঠিকমতো হয়নি, বিভিন্ন অসঙ্গতি রয়ে গেছে- সেগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত দেওয়া হবে। নতুন সীমানায় কোনো এলাকার জনগণের অসুবিধা-সমস্যা হলে, সেই এলাকার জনগণই দরখাস্ত দেবে- যাকে বলে গণপিটিশন।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
বিএনপির স্থানীয় নেতা কিংবা ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থীর তত্ত্বাবধানে এটা করা হবে। তবে তা কেন্দ্রীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকে আগে অবহিত করতে হবে। অর্থাৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে করতে হবে।
জানা গেছে, ইসির সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়ায় যেসব এলাকায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বিএনপি থেকে সেখানকার দলের নেতৃবৃন্দ, সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীদের রি-অ্যাকশনটা কি তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভৌগলিক দিক দিয়ে বড় ধরনের কোনো অসঙ্গতি হয়ে থাকলে, স্থানীয় বিএনপির মাধ্যমে সেটা নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের খসড়ায় যেসব সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলো আমরা ভালোভাবে দেখছি। পুনর্বিন্যাস করতে গিয়ে যদি কোথাও বড় ধরনের কোনো অসঙ্গতি হয়ে থাকে, ভোটার অ্যাডজাস্ট করতে গিয়ে ভৌগোলিক দিক দিয়ে যদি বড় ধরনের অসঙ্গতি হয়ে যায়। এবং সেটা যদি আমাদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বা আমাদের দলের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীদের কাছে অসঙ্গতি প্রতীয়মান হয়, তাহলে তা নিরসনের জন্য আমরা হয়তো উদ্যোগ নেব।’
এদিকে আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়া প্রকাশের পর থেকে অনেকেই অসঙ্গতির বিষয় তুলে ধরে ইসিতে আপত্তি আবেদন দিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার অন্যদের সঙ্গে আবেদন করেন বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের কাজী ম্যানশনের কাজী মো. মনিরুজ্জামান। তিনি তার আবেদনে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) সংসদীয় আসন ৯৮ এবং বাগেরহাট জেলার ৪টি আসনই বহাল রাখার দাবি জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর লিখিত আবেদনে কাজী মো. মনিরুজ্জামান নিজেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-৪ আসনে ধানের শীষের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।