ভালো কিছু উপহার দিতে হলে কাজের প্রতি প্রেম থাকতে হয়

সাক্ষাৎকার

বিনোদন সময় প্রতিবেদক
০২ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ভালো কিছু উপহার দিতে হলে কাজের প্রতি প্রেম থাকতে হয়

জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত ‘৮ম বেঙ্গলি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ডালাস ২০২৫’-এ নির্বাচিত হয়েছে তার অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আবর্ত- দ্য সার্কেল’। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনে আগামীকাল থেকে ধারাবাহিক নাটক ‘শাদী মোবারক’-এর প্রচার শুরু হচ্ছে। এসব নিয়েই কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- জাহিদ ভূঁইয়া

নাটকে অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন?

কয়টি নাটকে অভিনয় করছি, এটি আমার কাছে কখনোই মুখ্য ছিল না। ভালো নাটক কয়টি করলাম, সেটাই বড় বিষয়। এটি সত্যি যে, ওটিটিতে ব্যস্ততার কারণে নাটকে ইদানীং কাজ কম করছি। তবে ব্যতিক্রমী গল্পের কাজগুলো হাতছাড়া করি না।

‘শাদী মোবারক’ নিয়ে দর্শকদের কী বলবেন?

দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানা ধরনের চিন্তাভাবনা নিয়ে থাকি। এরপরও কিন্তু জীবন থেমে থাকে না। সময়ের গতিতে চলতে থাকে। চালাতে হয়। এর জন্য আনন্দের প্রয়োজন আছে। ‘শাদী মোবারক’ নাটকটি দর্শকদের সেই আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। পারিবারিক গল্পের মাধ্যমে হাস্যরসের বিষয়টি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা শামীম জামান। নাটকটি দেখলে দর্শকের সময়টা বৃথা যাবে না। প্রতি সপ্তাহের রবি থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে এটি প্রচার হবে।

সম্প্রতি ‘পাগলু’ নামের একটি নাটক করলেন। সেটি নিয়ে জানতে চাই।

এটিও কমেডি ধাঁচের গল্পে নির্মিত হয়েছে। তবে শেষ দিকে সামাজিক বার্তা পাবেন দর্শক। সেজান নূরের রচনায় নাটকটি নির্মাণ করেছেন সালমান রহমান খান। আমার বিপরীতে দেখা যাবে সাফা কবিরকে। এর আগেও তার সঙ্গে বেশ কিছু নাটকে কাজ হয়েছে। আশা করছি, এ নাটকটিও দর্শকের মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হবে।

‘আবর্ত- দ্য সার্কেল’ একটি আন্তর্জাতিক উৎসবের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। কেমন লাগছে?

অবশ্যই বিষয়টি আনন্দের। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিকদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের মানুষও আমাদের চলচ্চিত্র দেখবেন ভেবেই ভালো লাগছে। মাহামুদুল হাসান টিপু পরিচালিত ২৪ মিনিটের এই স্বলদৈর্ঘ্যটিতে আমার বিপরীতে দেখা যাবে রোবেনা রেজা জুঁইকে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এক নারীর নীরব সংগ্রাম, সামাজিক চাপ এবং বৃত্ত ভেঙে মুক্তির আকাক্সক্ষাকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে।

শুরুতেই বলছিলেন, ওটিটি নিয়ে আপনার ব্যস্ততা বেশি। এই প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ কেমন বলে মনে হয়?

সময়ের সঙ্গে সবকিছু বদলাবে, আধুনিক হবে- এটাই স্বাভাবিক। একটা সময় টেলিভিশন, এরপর ইউটিউব আর এখন ওটিটির দাপট- এটাকে আমি পজিটিভ হিসেবেই দেখছি। অভিনয়ের জায়গাগুলো বিস্তৃত হচ্ছে এতে। শিল্পীরা বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা যারা দুই মাধ্যমেই (নাটক এবং ওটিটি) কাজ করছি, দুটোর মধ্যে পার্থক্য হলো- ওটিটি জায়গাটা বেশ সিরিয়াস। এখানে একটু সময় নিয়ে সিরিয়াসলি কাজটা করা যায়। একটা সময় যেটা আমরা মঞ্চে করতে পারতাম। প্রপার রিহার্সাল, যত সময়ই লাগুক। সেভাবে কাজ করা যায় এখন ওটিটিতে। যেটা নাটকে সম্ভব হয় না। এ ছাড়া ওটিটিতে ভালো বাজেট থাকে, তাই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করা যায়। আর এখানে নিজেদের আন্তর্জাতিকভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এই মাধ্যমের ভবিষ্যৎ ভালো।

হাতে থাকা সিনেমার খবর কী?

নেয়ামূল মুক্তার পরিচালনায় ‘বৈদ্য’ সিনেমার শুটিং করেছি। এ ছাড়া ‘গাঙকুমারী’র শুটিং অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন ফজলুল হক তুহিন। সুমন আনোয়ার পরিচালিত ‘মির্জা’, নূর ইমরান মিঠু পরিচালিত ‘কুরকাব’ সিনেমার কাজও সম্পন্ন হয়েছে। একে একে সবগুলো সিনেমাই দর্শকের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি। ভালোবাসা থাকলেই ভালো কাজ হয়, কথাটা বিশ্বাস করেন?

ভালোবাসা কিন্তু দুই রকম! ১. প্রেমিকের ভালোবাসা। ২. রাক্ষসের ভালোবাসা। দুজনই ভালোবাসা পেতে চায়। কিন্তু চাওয়ার ধরনটা আলাদা। রাক্ষসের সময়জ্ঞান নেই। সে নগদ পেতে চাইবে। কিন্তু প্রেমিক সময় বুঝে চাইবে। আমাদের প্রেমিক হতে হবে। ভালো কিছু উপহার দিতে হলে কাজের প্রতি প্রেম থাকতে হয়।

নতুন যারা কাজ করছেন, তাদের কাজ কেমন লাগছে?

ইন্ডাস্ট্রি এত বড় হয়ে গেছে, অনেককে চিনিই না। দেখা যাবে অনেক বড় সেলিব্রিটি, কিন্তু আমি চিনি না। একসময় সবাই সবাইকে চিনতাম। একটা বিষয় খেয়াল করি, এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। তবে পেশাদার শিল্পী হতে হলে যা করতে হয়, সেটা করার সময় তাদের নেই। তারা মনে করে, সেটে গিয়ে কিছু একটা করে দিলেই হয়ে যাবে।