সেদিনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন বাঁধন

বিনোদন ডেস্ক
৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬:৩৫
শেয়ার :
সেদিনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন বাঁধন

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সরকারি দমন-পীড়নের প্রতিবাদে গত বছরের ১ আগস্ট রাজপথে নামেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ভোররাত থেকেই তার মনে ছিল অজানা এক উত্তেজনা। ঘুম হয়নি সারারাত। ভোরে উঠে স্নিকার্স পরে রওনা দেন, পরিবারের কাউকে না জানিয়েই। মেয়েটি তখন ছিল দাদু-নানুর কাছে। বাঁধন বলেছিলেন শুধু এটুকু ‘একটা মিডিয়া ইভেন্টে যাচ্ছি’।

নিকেতন থেকে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, মাইক গাড়িতে তুলে নেন তিনি। শহরে তখন কার্যত কারফিউ। পুলিশি বাধা অতিক্রম করেই তারা এগিয়ে যান ফার্মগেটের দিকে। গাড়ির চালককেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন, ‘যদি কিছু হয়, ভিডিও করে রাখবেন’।

ফার্মগেটের ব্যস্ত ফুটপাতে কয়েকজন পরিচিত মুখ জড়ো হচ্ছিলেন, হাতে ব্যানার। সেদিন বৃষ্টি ঝরছিল, পাশেই দাঁড়িয়ে অভিনেত্রী। মুখে দৃঢ়তা, চোখে শঙ্কা। ঠিক তখনই পুলিশ জানিয়ে দেয়- প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি কোনো সমাবেশ করা যাবে না। কিন্তু বাঁধন সরে যাননি।

সেই দিনটিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে একে একে জড়ো হতে থাকেন শিল্পী, নির্মাতা ও সংস্কৃতিকর্মীরা। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কারও হাতে প্রতিবাদের লেখা পোস্টার। পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান বাঁধনসহ অনেকেই। কারণ, পুলিশ কর্মকর্তারা বারবার সরে যেতে বলছিলেন- নিরাপত্তার কথা বলে ভয় দেখাচ্ছিলেন।

শেষমেশ, ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে সাময়িকভাবে প্রতিবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানেই শিল্পী-নির্মাতারা বক্তব্য রাখেন। যার মধ্যে ছিলেন মামুনুর রশীদ, পিপলু আর খান, ঋতু সাত্তার, আমরিন মুসা, আশফাক নিপুন, আকরাম খান, সুকর্ণ শাহেদ প্রমুখ।

বাঁধন লিখেছেন, ‘তারা (পুলিশ) চেষ্টা করেছিল মামুন ভাইকে গাড়িতে তুলে নিতে। কিন্তু আমরা সবাই হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেট চলে আসি। পরে বৃষ্টির মধ্যে আমরা ব্যানার হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাই।’

বাঁধনের ভাষায়, ‘এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে পাওয়ারফুল মুহূর্তগুলোর একটি। আমি ন্যায়বিচারের পক্ষে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি কখনোই দিনটির কথা ভুলব না।’

প্রতিবাদের সেই জমায়েতে আরও ছিলেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী, নূরুল আলম আতিক, মাতিয়া বানু শুকু, রেদওয়ান রনি, তানিম নূর, নুহাশ হুমায়ূন, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, আদনান আল রাজীব, শঙ্খ দাশ গুপ্ত, ইরেশ যাকের, সিয়াম আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, মিথিলা, সাবিলা নূর, মোস্তফা মনোয়ার, শ্যামল মাওলা, প্রবর রিপনসহ অনেকে।

একটি কথা বারবার ফিরে এসেছে বাঁধনের লেখায়, ‘আমি জানতাম না আমার জীবনে আজ কী ঘটতে যাচ্ছে।’

তবে সেদিনে শিল্পীদের সেই সমাবেশ আন্দোলনে অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করেছিল।