সংস্কার প্রস্তাবগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে গুণগত পরিবর্তন সম্ভব: তাহের
সংস্কারের যে প্রস্তাবগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে গুণগত পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। আজ বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ২২তম দিনের বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ আলোচনার পর যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে একমত হয়েছি, তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে বাংলাদেশে একটি গুণগত পরিবর্তন সম্ভব, কিন্তু গতকাল কমিশনের পক্ষ থেকে যে সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে, তা দেখে আমরা খুব হতাশ হয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হবে, কিন্তু সরকারের মেয়াদ বা কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার কি তাহলে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? যদি বর্তমান সরকার না থেকে পরবর্তী সরকার এসব বাস্তবায়ন করে, তাহলে এতদিন ধরে আমরা যে পরিশ্রম করেছি তা কি কেবল পরামর্শ দেওয়ার জন্যই ছিল? তাহলে তো এর কোনো মূল্যই থাকল না।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই ধরে নিয়েছিলাম, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আইনগত ভিত্তি পাবে এবং তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু যদি আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে এটি কেবল কথার কথা থেকে যাবে—যা জনগণ মানবে না, গুরুত্ব দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘কমিশনের চেয়ারপারসন ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে আগে একটি লিখিত চুক্তি হয়েছিল, কিন্তু মাঠপর্যায়ে তার কোনো বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়নি। কমিটমেন্ট না মানলে সেটি শুধু প্রতারণাই নয়, বরং জনগণের সঙ্গে উপহাস।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের পরিস্থিতি বহুবার তৈরি হয়েছে এবং তখনও আইনি গ্যাপ পেরিয়ে সমাধানের পথ বের করা হয়েছে। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এরশাদসহ অনেক শাসক আইনগত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় গিয়েছেন, সংসদ গঠন করেছেন, আইন পাস করিয়েছেন। ফলে এখনো আইনি ভিত্তি দেওয়ার সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আইনজ্ঞদের নিয়ে একটি বৈঠক করতে চাই, যেখানে এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো কীভাবে আইনগত ভিত্তি পেতে পারে, তা আলোচনা করা হবে। এখনই সেই আলোচনার সুযোগ দিলে ভালো হয়, নাহলে পরবর্তী সময়ে যেন সেই সুযোগ দেওয়া হয়। এই সনদের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়নযোগ্য না হয়, আইনগত ভিত্তি না থাকে, তাহলে তা শুধু একটি প্রতীকী দলিল হয়ে থাকবে। তাতে আমরা সই করব না, কারণ জনগণের কাছে যার কোনো বাস্তব মূল্য নেই, এমন প্রস্তাবে সই করে লাভ কী?’