আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ /

বনি আমিনকে ক্ষমা চাইতে বললেন মাহফুজের ভাই

অনলাইন ডেস্ক
২৯ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৭
শেয়ার :
বনি আমিনকে ক্ষমা চাইতে বললেন মাহফুজের ভাই

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বড় ভাইয়ের টেন্ডার সংক্রান্ত অস্বচ্ছতার অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সোমবার দিবাগত রাতে তথ্য উপদেষ্টার ভাই ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম মাহির ফেসবুকে এক পোস্টে তার বিরুদ্ধে আর্থিক অস্বচ্ছতার অপবাদ যিনি ছড়িয়েছেন তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। অন্যথায়, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

সোমবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ক্ষমা চাইতে বলেন মাহবুব আলম। এরপর, তথ্য উপদেষ্টা নিজেও তার বড় ভাইয়ের পোস্টটি শেয়ার দিয়ে পরবর্তীতে আরেকটি ফেসবুক পোস্ট দেন।

ফেসবুক পোস্টের শুরুতেই মাহবুব আলম ‘মিথ্যা অভিযোগের জবাব!!’ উল্লেখ করে লেখেন, ‘একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে আমার বিরুদ্ধে আর্থিক অস্বচ্ছতার গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমার অ্যাকাউন্টে গত ৬ মাসের বিবরণী এখানে দেওয়া হলো। আমার অ্যাকাউন্টটি এখনো সচল আছে। বনি আমিন নামক ব্যক্তি ও কিছু মিডিয়ার প্রচারিত তথ্য আসলে মিথ্যা বৈ কিছু নয়। আমি অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাকাউন্টটি ২৩ সাল থেকে খোলা।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমার ভাই মাহফুজ আলমের পক্ষ থেকে কোনো তদবিরের কাজ আমি করিনি। কাউকে সে আজ পর্যন্ত করতেও দেয়নি। আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবসা বাদে আমার কিংবা আমাদের পরিবারের কোনো আর্থিক লেনদেনের ইতিহাস নেই। আমাদের পরিবার গত ৩০ বছর ধরে ব্যবসায় জড়িত। আমার বাবা গত ১৬ বছর লীগের নিপীড়নের কারণে ঠিকমত ব্যবসা করতেই পারেননি।’

পোস্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই যুগ্ম আহ্বায়ক লেখেন, ‘আমার বাবার ও মাহফুজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো আমি ও আমার বাবা পরিচালনা করছি। এখানে কোনো অস্পষ্টতা নাই। সবই বাংলাদেশের আইন দ্বারা সিদ্ধ এবং পাবলিক ইনফরমেশন।’

গত নভেম্বরে দেশে ফিরে আসার পর থেকে অনেক তদবির এলেও মাহফুজ (তথ্য উপদেষ্টা) কোনো কাজই করেনি উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘বরং, আমাদের পরিবারের সব সদস্যদের স্পষ্ট নিষেধ করা আছে, যাতে কোনো তদবির তাকে না করা হয়। তার বা আমার বিরুদ্ধে আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা তদবির বাণিজ্যের কোনো প্রমাণ আজও কেউ দিতে পারেনি, পারবেও না। কারণ, আমরা করিনি।’

পোস্টের শেষে বিশেষ দ্রষ্টব্য হিসেবে মাহবুব আলম লেখেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে (বনি আমিন) ক্ষমা চাইতে হবে। আমি অস্ট্রেলিয়ায় আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেবো।’

এদিকে, মাহফুজ আলমের বড় ভাইয়ের এই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে বনি আমিন নামের ওই ভ্রমণকারী ও ইউটিউবারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ব্যাংক একাউন্ট ছেপে মাহফুজের ভাই আমাদের অ্যাডমিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে বললো। বনি আমিন যে কী এই ‘মাল’ সেটাই জানে না, আফসোস!’

বড় ভাইয়ের পোস্টটি শেয়ার দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিজের ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘তদবিরের কথা উঠলো যখন, একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক বন্ধু একজন ব্যক্তিকে আমার ভাইয়ার সাথে দেখা করায়। বিটিভির একটা টেন্ডারের কাজ করে দিলে তারা পার্সেন্টেজ দিবে এবং জুলাই নিয়ে কয়েকটা দেশে প্রোগ্রামের জন্য হেল্প করবে। আমি জানার পর এটা নিষেধ করে দেই। সদুদ্দেশ্যে হলেও রাষ্ট্রের আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। পরবর্তীতে সে টেন্ডারের কাজ ও স্থগিত হয়। 

সে ব্যক্তি কনভার্সেশন রেকর্ড করে একজন সাংবাদিককে পাঠায়। সে সাংবাদিক যোগাযোগ করলে আমি বলে দিই, ভাই আমরা একাজ করতে দেইনি। আর, ঐ লোক ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই জুলাইয়ের প্রোগ্রামের কথা বলে একাজ করেছে। উনি আমার কথা বিশ্বাস করে আর রেকর্ডটি পাবলিক করেননি। 

আজকাল অনেকের লেজকাটা যাচ্ছে বলে, আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। বিভিন্ন দলের কয়েকজন মহারথী এতে জড়িত। সব ষড়যন্ত্রই প্রকাশ পাবে। 

পুনশ্চঃ আমার নিকৃষ্ট শত্রুরাও গত ১২ মাসে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ করলেও দুর্নীতি বা আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ করেনি। বিভিন্ন দলের মহারথীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে তাতে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পবিত্র আমানত। হাজারকোটি টাকার চাইতেও ইজ্জত ও রাষ্ট্রের আমানত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বিঃদ্রঃ কয়েকটা বাক্য নিয়ে অযথাই জলঘোলা হচ্ছে, তাই এডিট করে দিলাম। জুলাই কতিপয় লোকের কাছে পলিটিকাল মবিলিটির ল্যডার।একটা না কয়েকটা দলের মহারথীরাই আমার/ আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। কিন্তু, সবার এখন গুজববাজ আর সুবিধাবাদী বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।’