ঝালমুড়ি বিক্রেতার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ১১ লাখ টাকা!

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
২৮ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫১
শেয়ার :
ঝালমুড়ি বিক্রেতার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ১১ লাখ টাকা!

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের খলারটেক গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মান্নান (৫৫)। সারাদিন ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। কিন্তু জুলাই মাসের বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়ে দেখেন, চলতি মাসে তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা। পাহাড় সমান বিল দেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আব্দুল মান্নানের বাড়িতে ওই মিটারটি মূলত তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমের নামে। তিনি গত দুই বছর আগে সৌদি আরবে চলে যান। এরপর থেকে জরাজীর্ণ একটি টিনের ঘরে থাকেন স্বামী আব্দুল মান্নান ও এক মেয়ে। বাড়িতে বিদ্যুত ব্যবহার করে চালান দুইটি ফ্যান, দুইটি বাতি ও একটি ফ্রিজ। প্রতিমাসে বিল আসে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। বিদ্যুতের বিলে দেখা যায়, গত জুন মাসে ব্যবহৃত ইউনিট ছিলো ১২০। আর জুলাই মাসে ব্যবহৃত ইউনিট উল্লেখ করা হয় ৭৯ হাজার ৩০৩। এক মাসে দুই ফ্যান, দুই বাতি ও এক ফ্রিজ চালিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন ৭১ হাজার ৪৬৮ ইউনিট। যার নেট বিল এসেছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৪ টাকা। যা বিলম্ব মাশুলসহ দাড়ায় ১১ লাখ ৪৪ হজার ৯০৫ টাকা। এমন পাহাড় সমান বিল দেখে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে আব্দুল মান্নানের। ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, ‘আমার স্ত্রী সৌদিতে থাকে। ভাঙাচুড়া একটি টিনের ঘরে আমরা বাবা-মেয়ে থাকি। বাড়িতে দুইটি ফ্যান, দুইটি বাতি ও একটি ফ্রিজ চালাই। প্রতি মাসে বিল আসে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু চলতি জুলাই মাসের বিল হাতে পেয়ে আমার ষ্ট্রোক করার অবস্থা। এ মাসে বিল এসেছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৪ টাকা। বিলম্ব মাশুলসহ ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৫ টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘লোকমুখে শুনতে পাই—বিদ্যুৎ বিল আদায় করতে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন এসে পুলিশের মাধ্যমে ধরে নেবে। এই ভয়ে বিল পাবার পর থেকে আত্নগোপনে আছি। আমি একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা। আমার ভাঙ্গা বাড়িতে এতে বিল কিভাবে এলো আল্লাহ মালুম।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর শ্রীপুর জোনাল অফিসের ম্যানেজার আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। বিল প্রস্তুতকারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ কারা হয়েছে। কোথাও ভুল হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি সমাধানে দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’