বিজ্ঞাপনে আর তৈরি হচ্ছে না তারকা
সিনেমা বা নাটক দিয়ে তারকাখ্যাতি পায় অনেকেই। কিন্তু একটা সময় তারকা তৈরি হয় মূলত বিজ্ঞাপনে। তবে সেটি এখন আর হচ্ছে না। কারণ তখন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে প্রচারিত হতো বিজ্ঞাপন। আর এখন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন নাকি বিজ্ঞাপনের ফাঁকে একটু অনুষ্ঠান? বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর লাগামহীন বিজ্ঞাপন বিরতির কারণে দর্শকদের মাথায় এমন প্রশ্ন অনেক বছরের। এরপর বিজ্ঞাপনের এই ঝামেলা থেকে বের হতে দর্শক চলে গেল ইউটিউব, ফেসবুকে।
দর্শকের বিরক্তির বিষয় হচ্ছে এখন এসব মাধ্যমেও অতিমাত্রায় বিজ্ঞাপনের প্রভাব। সুবিধা একটাই- চাইলেই বিজ্ঞাপনের অংশটুকু স্কিপ করা যায়। আর এই স্কিপের কারণেই বিজ্ঞাপন থেকে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন না মডেলরা। অথচ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তারকাখ্যাতি পাওয়া তারকাদের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। যারা এখনও কাজ করছেন নাটক, সিনেমায়। আমাদের আজকের আয়োজন সেসব তারকাকে নিয়ে, যাদের শুরুটা হয়েছে বিজ্ঞাপন দিয়েআদিল হোসেন নোবেল
বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে কথা উঠলেই প্রথমে চলে আসে আদিল হোসেন নোবেলের নাম। তিনি যেন বিজ্ঞাপনের সমার্থক শব্দ। শুধু মডেলিং দিয়েও যে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তার জাল ছড়ানো যায়, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ নোবেল। ফ্যাশন শোর মাধ্যমে ১৯৯১ সালে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। প্রথম বিজ্ঞাপনের কাজ করেন আফজাল হোসেনের নির্দেশনায় কোমলপানীয় স্প্রাইটের। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে ওই বিজ্ঞাপনটি আর প্রচার হয়নি। তবে বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে নোবেল আলোচনায় আসেন একই নির্দেশকের আজাদ বলপেনের বিজ্ঞাপন করে। এটিই তার প্রচার হওয়া প্রথম বিজ্ঞাপন।
সাদিয়া ইসলাম মৌ
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
১৯৮৯ সালে মডেলিং শুরু করা এই তারকা এখনও বিজ্ঞাপনে রাজত্ব করছেন। ‘বাউন্স শ্যাম্পু’র বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রথম দর্শকদের সামনে আসেন তিনি। নব্বই দশক থেকে কাজ করেছেন একের পর এক বিজ্ঞাপনে। যার প্রতিটিই জনপ্রিয়। আপন জুয়েলার্স, মৌচাক জুয়েলার্স, পাকিজা প্রিন্ট শাড়ি লাক্স, কেয়া কসমেটিকস- সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের করা প্রায় সব বিজ্ঞাপনই দর্শকহৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। নব্বই দশকে নোবেলের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন অসংখ্য বিজ্ঞাপনে। এর মধ্যে ‘কেয়া’ নামটি আনলেই নোবেল-মৌ জুটির মুখ ভাসে।
নিরব
বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলিং দিয়েই ২০০৪ সালে শোবিজে যাত্রা শুরু নিরবের। জনপ্রিয় নির্মাতা অমিতাভ রেজা পরিচালিত একটি বিজ্ঞাপনে প্রথমবার কাজ করেন। প্রথম বিজ্ঞাপনই নিরবের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এর পর বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনে কাজ করে পেয়ে যান তারকাখ্যাতি। কাজ করেছেন টিভি নাটকে। বিজ্ঞাপন ও নাটকে অভিনয় করার পর ২০০৯ সালে শাহীন সুমনের পরিচালনায় ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিষেক হয় নিরবের। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি কাজ করেছেন ভারতীয় ও মালয়েশিয়ার ছবিতে।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল
মামনুন হাসান ইমন
বর্তমান সময়ের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা মামনুন হাসান ইমনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে। বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনে কাজ করে শোবিজ জগতে তার যাত্রা শুরু। এর পর কাজ করেছেন রাঙাপরী মেহেদী, ওয়ালটন টেলিভিশন, মার্সেল ফ্রিজসহ অসংখ্য বিজ্ঞাপনে। বিজ্ঞাপনে পরিচিতি পাওয়ার পর কাজ শুরু করেন নাটকে। আফজাল হোসেনের পরিচালিত ‘এক আকাশের তারা’ দিয়ে নাটকের পথচলা শুরু তার।
নিলয় আলমগীর
আরও পড়ুন:
মারা গেলেন পরীমনির নানা
বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের এই সময়ের অভিনেতা নিলয় আলমগীর। নতুন এবং ভিন্ন ঘরানার গল্পের নাটকে অভিনয় করে যাচ্ছেন। অনেক কষ্ট, সংগ্রাম, অধ্যবসায়ের পর হয়ে উঠেছেন দর্শকের প্রিয়। রিয়েলিটি শো ‘সুপার হিরো সুপার হিরোইন’র মাধ্যমে মিডিয়ায় তার পথচলা শুরু হলেও বিজ্ঞাপনে তাকে এনে দিয়েছিল প্রথম জনপ্রিয়তা। এর পর চ্যানেল আইতে প্রচারিত সালাহ উদ্দিন লাভলু পরিচালিত ‘সোনার পাখি রূপার পাখি’ ধারাবাহিক নাটকটি দিয়ে তিনি পরিচিতি পান। আর একজন অভিনেতা হিসেবে নিলয়ের কাজ বাড়তে থাকে।