মাদারীপুরে বাড়িঘর ভাঙচুরসহ লুটপাট, বোমা বিস্ফোরণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
২৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০
শেয়ার :
মাদারীপুরে বাড়িঘর ভাঙচুরসহ লুটপাট, বোমা বিস্ফোরণ

মাদারীপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় ৪টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার পাশাপাশি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের হোগল পাতিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, এলাকাটি দুর্গম চরাঞ্চলে হওয়ায় চরের বাসিন্দারা রয়েছেন চরম আতঙ্কে। নদী এবং কাচা রাস্তা পার হয়ে ওই এলাকায় যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এতে করে এলাকাটি সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রাম হয়ে উঠেছে। এ কারণে চরাঞ্চলের চাঁদাবাজির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। 

স্থানীয়দের দাবি, এখানে পুলিশ যেতেও ভয় পায়। এলাকা থেকে প্রতি রাতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছেন ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আবুল। বালু উত্তোলনের ফলে আড়িয়াল খাঁ নদে সম্প্রতি ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করেন চরের বাসিন্দারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের মানুষ চাঁদা না দেওয়ায় ঝাউদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের নেতৃত্বে শামিম আকন, মিরাজ আকনসহ ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য শুক্রবার রাতে দুর্গম চরের বাসিন্দা আক্তার বেপারী, গিয়াস বেপারী ও জলিল বেপারীর পরিবারের ৪টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। সেই সঙ্গে অর্ধশত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এছাড়া এ সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রীও লুটে নেয়। এদিকে হাতবোমার বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ক্ষতিগ্রস্ত আক্তার বেপারী বলেন, ‘ওরা অতর্কিতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের দরজা-জানালা ভেঙে সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রশাসনের কাছে আমরা বিচার চাই।’

চরের এক নারী জানিয়েছেন, ‘দলবেঁধে ৭০-৮০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এসে প্রথমে পাশে বোমা বিস্ফোরন ঘটায়। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তখন বাড়ির পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। এরপর তারা লুটপাত ও ভাঙচুর চালায়। এরা প্রতিদিন নদী থেকে লাখ লাখ টাকার অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে।’

এদিকে নানা অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বাড়ি গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোনও বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।