উমামা ফাতেমার পোস্ট /

‘খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে’

অনলাইন ডেস্ক
২৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৬
শেয়ার :
‘খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে’

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচজনের শেকড় অনেক গভীরে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আটক পাঁচজনের একটি ছবি শেয়ার করে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

পোস্টে উমামা ফাতেমা লিখেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচজনের চাঁদাবাজির খবর শুনে আমার পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এতটাই আশ্বার্যান্বিত হওয়ার অভিনয় করছেন যে আমার মনে হচ্ছে আমিই সবথেকে কম আশ্বর্য হয়েছি। এই ছেলেগুলাকে তো নেতাদের পেছনে প্রটোকল দিতে দেখা গেছে এতদিন যাবৎ। সচিবালয় থেকে শুরু করে মিছিল-মিটিং, মারামারি সব জায়গাতেই সমন্বয়কদের ডান হাত, বাম হাত হিসেবে নির্বিঘ্নে প্রটোকল দিয়ে গেছে। গুলশান বনানী গ্যাং কালচারের অজস্র অভিযোগ অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে ছিল।’

তিনি লিখেছেন, ‘এই ছবির রিয়াদ নামের ছেলেটা গত ডিসেম্বর মাসে রূপায়ন টাওয়ারে আমার সামনে অত্যন্ত উশৃঙ্খল আচরণ করেছিল। আমরা মেয়েরা তাকে থামানোর চেষ্টা করলে আমাদের ওপর পাল্টা চড়াও হয়। ওই ঘটনার পর ছেলেটার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে হুমকি, মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে। আমি জেনে তখন মোটেও অবাক হইনি, কারণ ততদিনে বৈষম্যবিরোধীতে এই ধরনের মানুষজনের আনাগোনাই সর্বত্র টের পাওয়া যেত।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ঠিকই তারা রূপায়ন টাওয়ারে অবাধে আসা যাওয়া করত। কারও দুর্নীতি বা অসততার ব্যাপারে অভিযোগ জানালে উত্তরে পিনড্রপ সাইলেন্স উপহার পেতে হবে। আর আমি চোখের সামনে দেখতাম এসব লোকজনই কিভাবে দিনেশেষে এক্সেস করে নেয়। আজকে এত মাস পর এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে বলার ভাষা পাই না কেন?! যে যেভাবে পারছে এই প্ল্যাটফর্মকে নষ্ট করেছে।’

‘আজকের এই চাঁদাবাজির খবর দেখে আশপাশের সবাই এত অবাক হওয়ার ভান করছেন বিষয়টা কিছুটা হাস্যকর বটে’, যোগ করেন উমামা ফাতেমা। 

পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, ‘ইশ! মানুষ কত নিঃষ্পাপ! সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো তারা আবিষ্কার করেছেন এই ছেলেগুলো আজ কিভাবে চাঁদাবাজি করল?! অত্যন্ত দুঃখিত বন্ধুরা, বলতে হবে এই প্রথম কোনো চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তারা পুলিশের হাতে ধরা খেল। ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে।’

প্রসঙ্গত, চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পাঁচ নেতা। শনিবার রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা চাইতে গেলে গুলশান থানা পুলিশ তাদের হাতেনাতে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সাদাব (২১), মো. আমিনুল ইসলাম (১৩), ইব্রাহিম হোসেন মুন্না (২৪) ও আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (২৫)। 

এরই মধ্যে তিনজনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।