মাইলস্টোনের ভবন রাজউক ও সিএএবির অনুমোদিত কি না, খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ

অনলাইন ডেস্ক
২৫ জুলাই ২০২৫, ২১:৫৪
শেয়ার :
মাইলস্টোনের ভবন রাজউক ও সিএএবির অনুমোদিত কি না, খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ

মাইলস্টোনের ভবন রাজউক ও সিএএবির অনুমোদিত কি না, তা খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। আজ শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির কনফারেন্স রুমে ‘মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা : জননিরাপত্তা এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রের দায় ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘১৯৯৫ সালের ডিএমডিপি অনুযায়ী বর্তমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা জলাভূমি ছিল, যা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাহলে রাজউক কার স্বার্থে কিংবা কোন উদ্দেশে ডিএমডিপি অনুসরণ না করে ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোনে শহর উন্নয়নের অনুমোদন দেয়? এ প্রশ্নটি থেকেই যায়।’

মাইলস্টোনের দুর্ঘটনার বিষয়ে বিআইপি সভাপতি বলেন, ‘তাদের সব ভবন রাজউক ও সিএএবির অনুমোদিত কি না, এটি খতিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির বারান্দা গ্রিল দিয়ে আটকানো ছিল এবং একটি মাত্র প্রবেশ, বহির্গমন পথ ছিল, যা উদ্ধারকাজকে ব্যাহত করে এবং কোমলমতি শিশুদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’

এ নগর পরিকল্পনাবিদ বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ও নগর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধু বিমান ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোনের নিরাপত্তা নয়, সম্পূর্ণ ঢাকায় নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য ভূমি দখল, দুর্নীতি ও আইন ভঙ্গের জন্য ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান, সংস্থার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান ও পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই সঠিক নগর পরিকল্পনা অনুসরণ করে আমাদের শিশু ও সাধারণ জনগণের নিরাপদ আবাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের জনবহুল কোনো এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ার কোনো সুযোগ নেই। নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বিমান উড্ডয়নের পথ সবসময় নিরাপদ রাখতে হয়, যে কারণে উন্নত বিশ্বে বিমানবন্দর শহরের থেকে তুলনামূলক দূরত্বে থাকে এবং শহর ও বিমানবন্দরের মধ্যে বাফার জোন থাকে।’

ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘ঢাকা বিমানবন্দর নির্মাণকালীন সময়ে শহর থেকে দূরে থাকলেও পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমান শহর বিমানবন্দরের কাছাকাছি গড়ে ওঠে। শহর উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিমানের ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোন বাদ দিয়ে নগরায়ণ প্রয়োজন ছিল।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্টের ফ্লাইং অ্যাপ্রোচ জোন থেকে সব ধরনের জনসমাবেশমূলক প্রতিষ্ঠান, যা শুধু স্কুল-কলেজে সীমাবদ্ধ না, হাসপাতাল, মসজিদ, ঈদগাহের মতো স্থাপনা, যা জনসমাবেশকে উদ্বুদ্ধ করে এমন ভূমি ব্যবহারকে ধীরে ধীরে স্থানান্তর করতে হবে। তা না হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি থেকেই যাবে।’

বিআইপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি শাহরিয়ার আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামজিদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ড. মু. মোসলেহ উদ্দীন হাসান, বোর্ড সদস্য আবু নাঈম সোহাগ প্রমুখ।