ফকির আলমগীরের চলে যাওয়ার চার বছর
কণ্ঠযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের আজ চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২১ সালের আজকের দিনে তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে। আজীবন বঞ্চিত থাকা মানুষের পাশে ছিলেন তিনি। তার গানগুলো বিশ্লেষণ করলে এমন বার্তাই মেলে। যেমন- তার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় গান ‘ও সখিনা গেছস কি না ভুইলা আমারে’। ‘সখিনা’ গান দিয়ে তিনি অমর হয়ে থাকবেন। গানে গানে তিনি আজীবন অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। সুরে সুরে ফকির আলমগীর ছিলেন এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। এ ছাড়াও তার কণ্ঠে ‘মায়ের এক ধার দুধের দাম’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ প্রভৃতি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মে দিবস দখলে থাকত ফকির আলমগীরের কণ্ঠে। ‘নাম তার ছিল জন হেনরি ছিল যেন জীবন্ত ইঞ্জিন, হাতুড়ির তালে তালে গান গেয়ে খুশি মনে কাজ করে রাতদিন, কালো পাথরে খোদাই জন হেনরি, গ্রানাইট পেশি গড়া ঝলমল, হাতুড়ির ঘায়ে ঘায়ে পাথরে আগুন ধরে, হাতুড়ি চালানো তার সম্বল।’ আরেক গান ‘কালো কালো মানুষের দেশে, ঐ কালো মাটিতে/রক্তের স্রোতের শামিল/নেলসন ম্যান্ডেলা তুমি অমর কবিতার অন্ত্যমিল/তোমার চোখেতে দেখি স্বপ্ন-মিছিল/অগুন্তি মানুষের হৃদয়ের মিল।’ পৃথিবীর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা নেলসন ম্যান্ডেলাকে নিয়ে ১৯৮৯ সালে এই অসাধারণ গানটি কণ্ঠে তোলেন ফকির আলমগীর। বাংলাদেশ সফরে আসার পর স্বয়ং নেলসন ম্যান্ডেলাও গানটি শুনে মুগ্ধ হন।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
গণসংগীত ও দেশীয় পপসংগীতে তার ব্যাপক অবদান। ১৯৬৯ সালে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে গণ-অভ্যুত্থানে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। ১৯৭৬ সালে ফকির আলমগীর গড়ে তোলেন লোকপ্রিয় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে একুশে পদক পান ফকির আলমগীর। ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ও ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর জানান, চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন। এ সময় গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া খিলগাঁওয়ের মাটির মসজিদে দোয়া ও বাসায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল