হাসতাপালে স্বজনদের আহাজারি

জবি প্রতিনিধি
২১ জুলাই ২০২৫, ১৮:০১
শেয়ার :
হাসতাপালে স্বজনদের আহাজারি

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের বেশিরভাগই মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থী, তারা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এখানে আহতদের খোঁজ নিতে আসা স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

এর আগে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানটি আজ সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে মাইলস্টোন কলেজের ‘হায়দার হল’ নামক ভবনের ছাদে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে ছিল। বিমান বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের জন্য আরও সময় চেয়েছে। বিমানটিতে একমাত্র পাইলট হিসেবে ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। তিনিও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিকট শব্দে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ক্যাম্পাসে আগুন ধরে যায় এবং কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার সময় ওই ভবনে কলেজের প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিলো, ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, আজ দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে খবর পাওয়ার চার মিনিটের মধ্যে তাদের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর, এবং পূর্বাচল ফায়ার স্টেশন থেকে মোট ৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়। এছাড়াও দুটি বিজিবি প্লাটুন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

মাইলস্টোন কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুল হাসান আদিত বলেন, ‘বিমানটি প্রথমে আমাদের কলেজের ৭ নম্বর ভবনে ধাক্কা খায়। এরপর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দিকে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইনস্টিটিউটে আহতদের স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। অনেকেই তাদের সন্তান ও আত্মীয়দের অবস্থা জানতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

মেয়র খোঁজ নিতে আসা একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে কলেজে ক্লাস করতে গিয়েছিল। এখন জানি না সে বেঁচে আছে কিনা!’

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ৬০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক উভয়ই রয়েছেন।

এদিকে হাসপাতালের বাইরে রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।