বকেয়া বেতনের দাবি /

শ্রীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
২১ জুলাই ২০২৫, ১০:১১
শেয়ার :
শ্রীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতন ও ছুটির টাকার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় এএ ইয়ার্ণ মিলস্ লি: নামের কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে সড়কের উভয়পাশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রী। 

অবরোধের সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা ও সড়কে গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।  

শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতি মাসের ৭ তারিখে অমাদের বেতন পাওয়ার কথা। এখনো জুন মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। আমরা দফায় দফায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও আমাদের বকেয়া বেতন ও ছুটির টাকা পাইনি। একাধিকবার আশ্বাস দিলেও পরিশোধ করা হয়নি আমাদের জুন মাসের বেতন ও ছুটির টাকা।’

জানা গেছে, বেতন নিয়ে তালবাহানা করায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এর জেরে রবিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় ভেতরে বেতনের দাবিতে অবস্থান করে। কর্তৃপক্ষ রাতের মধ্যে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। এর পর সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বেতন পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। 

শ্রমিকরা জানায়, নির্ধারিত সময়ে বেতন না পেলে তাদের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। দোকানে বাকি, বাসা ভাড়া পরিশোধ করতে না পারলে শুনতে হয় নানা কথা। স্বজনদের নিয়ে পোহাতে হয় বিড়ম্বনা। 

তারা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বেতন ভাতা নিয়ে টালবাহানা করলে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামি।’ 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর করে।পরে শত শত শ্রমিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনাবার এলাকায় অবরোধ করে বেশ ক’টি গাড়ি ভাঙচুর করে।তারা কারখানার আসবাপত্র সড়কে ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দু’পাশে সৃষ্টি হয় প্রায় ৩০ কিমি দীর্ঘ যানজট। আটকা পড়ে শতশত গাড়ি। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী। 

এ বিষয়ে এএ ইয়ার্ণ মিলস্ লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুলতান উদ্দিন বলেন, বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে শ্রমিকদের জানানো হবে। কিন্তু এর আগেই শ্রমিকরা কারখানায় ভাঙচুর করে রাস্তায় নামে। 

জানতে চাইলে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা হবে।’ 

মাওনা হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আয়ুব আলী বলেন, সন্ধ্যা ৭টা থেকে শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাত ১০টার দিকে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মহম্দ আব্দুল বারিক জানান, সড়ক অবরোধের খবর পয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে সেনাবাহিনী এসে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।