প্রথমবারের মতো সৌরজগতের জন্ম দেখলেন বিজ্ঞানীরা
প্রথমবারের মতো কোনো নক্ষত্রকে ঘিরে গ্রহ গঠনের প্রাথমিক মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এই আবিষ্কার আমাদের নিজ সৌরজগতের সৃষ্টি রহস্যের অনেক জট খুলে দিতে পারে।
এই নতুন সৌরজগৎটি ‘এইচওপিএস-৩১৫’ নামের একটি শিশু নক্ষত্রের চারপাশে গড়ে উঠছে, যা দেখতে অনেকটা আমাদের সূর্যের শৈশবকালের মতো। এই নক্ষত্র পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩০০ আলোকবর্ষ দূরে বিখ্যাত ওরিয়ন নীহারিকায় অবস্থিত।
নতুন জন্ম নেয়া তরুণ নক্ষত্র ঘিরে গ্যাস ও ধূলিকণার বিশাল একটি চক্র থাকে, যাকে গ্রহজনন চক্র বলা হয়। এই চক্রের ভেতরেই ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন গ্রহ। এই চক্রে সিলিকন মনোক্সাইড জাতীয় উষ্ণ খনিজ কণাগুলো একত্র হয়ে জমা হতে থাকে। ধীরে ধীরে এসব কণা একে অপরকে আকর্ষণ করে বড় হতে থাকে এবং একসময় তা এক কিলোমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের ‘অণুগ্রহ’ বা ভ্রূণগ্রহে পরিণত হয়, যা পরে পূর্ণাঙ্গ গ্রহে রূপ নেয়।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আমাদের পৃথিবী ও বৃহস্পতি গ্রহের কেন্দ্রবিন্দু গঠনে ব্যবহৃত এই প্রাথমিক খনিজ পদার্থগুলোর নমুনা আজও প্রাচীন উল্কাপিণ্ডে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ‘এইচওপিএস-৩১৫’-এর চারপাশে ঘূর্ণায়মান চক্রে এই ধরনের গরম খনিজ পদার্থের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ন্যাচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণার প্রধান লেখক নেদারল্যান্ডসের লাইডেন ইউনিভার্সিটির মেলিসা ম্যাকক্লুর বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো আমরা আমাদের সৌরমণ্ডলের বাইরে কোনো নক্ষত্রের চারপাশে গ্রহ গঠনের একেবারে প্রারম্ভিক ধাপ শনাক্ত করলাম।’
প্রথমে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এই খনিজের উপস্থিতি শনাক্ত করে। এরপর বিজ্ঞানীরা চিলিতে অবস্থিত ইউরোপিয়ান সাদার্ন অবজারভেটরির আলমা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে খনিজগুলোর রাসায়নিক সংকেত ঠিক কোথা থেকে আসছে তা নিশ্চিত হন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
তারা দেখতে পান, এই খনিজ চক্রের এমন এক অঞ্চলে জমাট বাঁধছে, যা আমাদের সূর্যকে ঘিরে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জ বেল্টের মতো।
গবেষণার সহ-লেখক এবং যুক্তরাষ্ট্রের পারডু ইউনিভার্সিটির মেরেল ফান’ত হফ বলেন, ‘আমরা এমন একটি সৌরজগতের জন্ম প্রত্যক্ষ করছি, যেটা দেখতে অনেকটাই আমাদের সৌরজগতের আদিরূপের মতো।’
এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে গ্রহ সৃষ্টির রহস্য আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিদরা।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস