রাজধানীতে এনসিপির মশাল মিছিল
গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রায় নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় এনসিপির মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার রাতে বাংলা মোটরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি বাংলামটর থেকে শুরু হয়ে কারওয়ান বাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এই কর্মসূচি পালন করেছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দলটি।
বিক্ষোভ মিছিলে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী আকরাম হোসাইন বলেন, ‘এনসিপির জুলাই পদযাত্রা উপলক্ষ্যে আজ গোপালগঞ্জে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সমাবেশকে ঘিরে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ বহুমুখী ষড়যন্ত্র করেছে। শুধু তাই নয় জুলাই বিপ্লবীদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা সারাদেশ থেকে লুকিয়ে থাকা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও সশস্ত্র ক্যাডারদের গোপালগঞ্জে একত্রিত করতে থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে যখন জুলাই পদযাত্রার বহর গোপালগঞ্জে পৌঁছে তখনই গাড়ি বহরের উপর সশস্ত্র হামলা করে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও ক্যাডাররা। জাতীয় নাগরিক পার্টি এই হুমকি ও হামলাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিপ্লবী গোপালগঞ্জ বাসীকে সাথে নিয়ে সমাবেশ সফল করে। ঠিক তখনই তারা সমাবেশে সশস্ত্র হামলা করে। এতে দুইজন কেন্দ্রীয় সংগঠক আহত হন। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় জুলাই অভ্যুত্থানের বিপ্লবীরা আবারো রাজপথে নেমে আসবে এবং মুজিবাবাদকে চিরস্থায়ী কবর রচনা করবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রধান সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আজকে যে হামলা হয়েছে তা মুজিবাবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত তারা কিভাবে এমন সশস্ত্র ক্যাডারদের দিয়ে হামলা করে তা আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই দায় কখনোই এড়াতে পারে না। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় না আনতে পারলে ছাত্র জনতা আবারো জুলাই কায়েম করবে।’
কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক এস এম শাহরিয়ার বলেন, ‘জুলাইয়ের সন্তানদের ওপর হামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হল এখনো আমরা জুলাই গণহত্যার জন্য আওয়ামী লীগের বিচার শুরুই করতে পারি নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আজকের ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তারা ভোটের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মোটেও ফিট না।’
কেন্দ্রীয় সংগঠক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের মোস্তাক আহমেদ শিশির বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আওয়ামী লীগের এই হামলা আমাদের পুনরায় ফ্যাসিবাদের আস্ফালন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। জুলাই ছাত্র জনতা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত সন্ত্রাসী লীগের এই আস্ফালন সহ্য করা হবে না।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এদিকে আজকের এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন পয়েন্টে তাৎক্ষণিক ব্লকেড কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শাহবাগ, চাঙ্খারপুল মোড়, বাবু বাজার ব্রিজ, সায়েন্সল্যাব মোড় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর এর মোহাম্মদপুর, উত্তরার বিএনএস সেন্টার, গুলশান ২ চত্ত্বর, মিরপুর ১০নং চত্ত্বর, রামপুরা ব্রিজ এ ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের দপ্তর সমন্বয়কারী এম এম শোয়াইব এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ মিছিলে আরো বক্তব্য দেন মহানগর ও থানা নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও আজকের বিক্ষোভ মিছিল শেষে আগামীকাল একযোগে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এর প্রতিটি থানার সামনে বিকাল ৪টায় প্রতিবাদী মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ঘোষণা করেন আকরাম হোসাইন।
