খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তারের খবরে আদালতের সামনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা
ক্যামব্রিয়ান স্কুল এবং বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক-এর চেয়ারম্যান লায়ন এম কে খায়রুল বাশারকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ঢাকার চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সামনে আজ মঙ্গলবার সকালে জড়ো হয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। মানিলন্ডারিং মামলায় গতকাল সোমবার সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার এম কে খায়রুল বাশারকে আদালতে আনা হবে- এই খবরে সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আদালতের সামনে হাজির হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।একই সঙ্গে আদালতের কাছে খায়রুল বাশারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তাদের দাবি, খায়রুল বাশার বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে শত শত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
সিআইডি জানায়, মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশারকে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টিম অটক করেছে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখিয়ে শত শত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎকারী খায়রুল বাশার বাহারকে মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেপ্তার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার দুপুরে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি টিম রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, খায়রুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্র গড়ে তোলেন। ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ’- এই আশ্বাসের আড়ালে ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি।
সিআইডি আরও জানায়, চটকদার বিজ্ঞাপন, ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া প্রতিনিধিত্বের নাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরাসরি অফিসে এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। তদন্তে দেখা যায়, প্রতারিত অনেক শিক্ষার্থীর নামে কোনো আবেদনই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে করা হয়নি, আবার অনেকেই বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে পড়েছেন বিপদের মধ্যে।
আরও পড়ুন:
১১ বছরেও বিচারে অগ্রগতি নেই
মামলাটির প্রাথমিক তদন্তকালে এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই এনআই অ্যাক্টসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সিআইডির অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, অভিযুক্তরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ নিজেদের নামে ও অন্যদের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করে তা দিয়ে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা, এবং অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে গুলশান (ডিএমপি) থানাসহ সারাদেশে একাধিক মামলা রুজু করেছে।