মুজিববাদী সংবিধানের নতুন পাহারাদার বিএনপি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
১৫ জুলাই ২০২৫, ০০:৫৪
শেয়ার :
মুজিববাদী সংবিধানের নতুন পাহারাদার বিএনপি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন,‘বিএনপি বাংলাদেশে মুজিববাদী সংবিধানকে টিকিয়ে রাখতে চাইছে। তারা এখন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজে পরিণত হয়ে মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমরা জেলায় জেলায় যখন পদযাত্রা শুরু করেছি, জোয়ারের মত মানুষের ঢল নেমেছে, চারিদিকে যখন বাধভাঙ্গা উচ্ছাসের পদধ্বনি, তখন আমাদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে নতুন করে ষড়যন্ত্র। ’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির ১৪তম দিনে আজ সোমবার দুপুরে পটুয়াখালীতে পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত পথসভায় এ কথা বলেন তিনি। 

তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলেও এখনো আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান আছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তরুণরা যে মাফিয়া দুর্নীতিবাজ সিস্টেমের বদল ঘটাতে চেয়েছিল সেই সিস্টেম কখনোই চায় না অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব কোনভাবে দাঁড়াক, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকুক। অভ্যুত্থানের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে যা অভুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে। ’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী, আমলাতন্ত্রের সিস্টেম আর ডিজিএফআই সহ বাংলাদেশের এস্টাবলিস্টমেন্ট গুলো এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। শত্রু বাংলাদেশের ভেতরে নয় বাহিরে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু আমাদেরকে দুর্বল করে রাখার জন্য সকলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে মিডিয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ তৈরি করে গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের সকলের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। মানুষের সমর্থন নিয়ে এই ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়া হবে। এদেরকে প্রতিহত করার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানাই।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘আমরা মাফিয়া দুর্নীতিবাজ সিস্টেম বদল করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। ফেসিস্ট হাসিনার পতন ঘটানো হলেও আরেকটি নতুন দলের আবির্ভাব ঘটেছে। যারা মুজিববাদ সংবিধান রক্ষা ও দুর্নীতি চাঁদাবাজের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি এদেশে বিভাজন তৈরী করে চাঁদাবাজদের পাহাড়াদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। জুলাই আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে তাদের সঙ্গে কোন আপোষ নেই, ঐক্য নেই। ’

আগামী ৩ আগষ্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে এবং সকলের সঙ্গে সেখানে দেখা হবে বলেও ঘোষনা দেন তিনি।

এর আগে শহরের সার্কিট হাউস থেকে নিউমার্কেট হয়ে পদযাত্রা শুরু করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এনসিপি জেলা সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, জুলাই গণ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহনকারী ছাত্র জনতা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত এনসিপির সদস্যরা পদযাত্রায় অংশগ্রহন করেন। পদযাত্রাটি নিউমার্কেট থেকে লঞ্চ ঘাট, চকবাজার, পুরান বাজার, মুকুল সিনেমা হল, বনানী, পৌরসভা হয়ে সার্কিট হাউজের সামনে গিয়ে পথসভায় মিলিত হয়। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির পটুয়াখালী জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসার সভাপতিত্বে পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ। 

কর্মসূচীতে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

সভা শেষে তারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের খোঁজ খবর নেন। পরে পটুয়াখালী জেলা দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন শেষে পাশ্ববর্তী জেলা বরগুনার উদ্যেশ্যে রওয়না দেন তারা।