টঙ্গীর কলেজছাত্র মাহফুজ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
গাজীপুরে টঙ্গী বাজারে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র মাহফুজকে ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
আজ রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় র্যাবের অপস এন্ড মিডিয়া অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালমান নুর আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রাফসান জানি রাহাত (২৮), মো. রাশেদুল ইসলাম (২০), মো. কাওছার আহম্মেদ পলাশ (২৩), রাকিব ইসলাম (২৬)।
এদিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, ছুরি এবং ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত মোবাইল সেটও উদ্ধার করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার টঙ্গী এবং আব্দুল্লাহপুরের বাস স্ট্যান্ডের মাঝামাঝি স্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধ্যায়নরত বরিশালের হাতেম আলী কলেজের ছাত্র মো. মাহফুজুর রহমানকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর বোন জামাই মো. জসিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনা অনুসন্ধানে কোনো ক্লু ছাড়াই র্যাবের ছায়া তদন্ত শুরু হয়। ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে ভিকটিম এর এন্ড্রয়েড সেটটি হত্যাকাণ্ডের প্রায় ২ ঘন্টা পর সনাক্ত করা যায়। এরই সূত্র ধরে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল মোবাইলের গ্রাহককে দ্রুত সময়ে সনাক্ত করে নজরদারিতে আনে। মোবাইলের গ্রাহককে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি জানান, ভিকটিমের সেটটি টঙ্গীর মাজার বস্তির এক চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ হাজার ৫০০ শত টাকা মূল্যে ক্রয় করেন।
এরপর র্যাব-১ এর সদস্যরা মোবাইলের গ্রাহককে বিভিন্ন সন্দেহভাজন চোরাই মোবাইল চক্রের সদস্যদের ছবি দেখানো হয় এবং গ্রাহক তৎক্ষনাৎ মোবাইল বিক্রেতা রাকিবকে সনাক্ত করে। পরবর্তীতে র্যাব-১ এর অভিযানিক দল তাকে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে।
মোবাইল বিক্রেতা রাকিব একজন প্রাক্তন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি বর্তমানে ছিনতাইকারীদের ব্যবহার করে কম মূল্যে মোবাইল সংগ্রহ করেন এবং লাভজনক মূল্যে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে বিক্রয় করেন। একই সঙ্গে ছিনতাইকারীরা তার নিকট হতে সুইচ গিয়ার এবং অন্যান্য ধারাল সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়। চোরাই মোবাইল বিক্রেতা রাকিবের কাছে ১টি ছিনতাই চক্র সর্বমোট ৩টি মোবাইল সেট বিক্রয় করেন। এরপর রাকিবের দেওয়া তথ্য মতে বাকি আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র মাহফুজ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, ঘটনার দিন মোটরসাইকেল ড্রাইভারসহ রাত ১১টা ৩৭ মিনিট থেকে ওই স্থানে উপস্থিত ছিলেন। এরপর মাত্র ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের মধ্যেই তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি শেষ করে দ্রুত পালিয়ে যান।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।