দিলদারের সঙ্গে হারিয়ে গেছে হাসি
স্মরণ
অভিনয়ে এসে কমেডিয়ান চরিত্র দিয়ে তিনি জয় করে নিয়েছেন সিনেমাপ্রেমীদের মন। আঙ্গিক এবং বাচিক অভিনয়ে তার স্বকীয়তা ছিল। সিনেমা হলে মুগ্ধ হয়ে সেই অভিনয় দেখতে যেতেন দর্শক। বলছি দিলদারের কথা। সবাই তাকে হাসির রাজা বলে ডাকতেন। কেউ কেউ আবার হাসির জাদুকর বলেও সম্বোধন করতেন। আজ এই কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৩ সালের এই দিনে ৫৮ বছর বয়সে তিনি জীবনের মায়া কাটিয়ে চিরদিনের মতো পৃথিবী ত্যাগ করেন। দিলদারের মৃত্যুর পর বাংলা সিনেমা থেকে যেন হাসিটাও হারিয়ে গেছে। ২০ বছর বয়সে দিলদার প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। তার পর থেকেই নিজের জগৎ চেনাতে থাকেন অভিনেতা। দিনে দিনে নিজেকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী, অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে থাকেন বাংলা চলচ্চিত্রে। একসময় তার জন্য লেখা হতে থাকে আলাদা গল্প। এমনও সময় গেছে, প্রযোজকদের আস্থা ছিলÑ দিলদার মানেই সিনেমা হিট। মানুষকে হাসিয়েই যেমন খ্যাতি পেয়েছেন, তেমনি কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। দিলদার মারা যাওয়ার পর বাংলা চলচ্চিত্রে কৌতুক অভিনয়ের সেই জায়গাটা এখনও খালি রয়ে গেছে। শক্তিমান এই অভিনেতা জীবদ্দশায় এই শূন্যতা নিয়ে ভাবতেন। তিনি জনপ্রিয় হিসেবে নায়কদের চেয়েও কোনো অংশে কম ছিলেন না।
পাঁচশর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন দিলদার। ‘লড়াকু’, ‘যন্ত্রণা’, ‘ত্রাস’, ‘তেজী’, ‘খায়রুন সুন্দরী’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’সহ অনেক সিনেমায় কমেডিয়ান হিসেবে দর্শকরা পেয়েছেন তাকে। নারী কমেডিয়ান নাসরিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে শতাধিক গানেও তিনি পারফর্ম করেছেন। দিলদারের জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে নূতনের বিপরীতে তাকে নায়ক বানান ‘বেদের মেয়ে জোছনা’র পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুল। ‘আবদুল্লাহ’ নামের সেই ছবি হিট হয়ে গেলে বেশ সাড়া পড়ে যায়। শুধু অভিনেতাই নন, দিলদার মানুষ হিসেবেও সবার কাছে সমাদৃত ছিলেন। তার সময়ের অন্য শিল্পীদের মন্তব্য, দিলদারের মধ্যে কোনো অহঙ্কার ছিল না। জীবনযাপনও করতেন স্বাভাবিক। একটা সময় ছিল, যখন কেউ কাউকে হাসালেই সেই মানুষকে দেওয়া হতো ‘দিলদার’ উপাধি। কৌতুকের সমার্থক শব্দ ও প্রবাদে পরিণত হয়েছিল এই অভিনেতার নাম। মৃত্যুর এত বছর পরও বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের একটি অধ্যায়জুড়ে আছেন দিলদার।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল