ধরলার তীব্র ভাঙন /
নদীগর্ভে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, হুমকিতে আরও পাঁচ শতাধিক
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোরক মন্ডল এলাকায় ধরলা নদীর তীব্র ভাঙনে অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়ও প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় চরম দুচিন্তায় দিন কাটছে স্থানীয়দের। এ অবস্থায় অনেকেই ঘরবাড়ি অন্য এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে টেকসই তীর রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান স্থানীয়রা।
তীব্র ভাঙনে ধরলা নদী চর গোরক মন্ডল গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলীর (৬১) বাড়ির কাছে এসে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘৬১ বছর বয়সে কমপক্ষে ৪ বার ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি জমিজমা হারিয়ে পথে বসেছি। গত ৩ বছর ধরে মানুষের জমিতে ঘরবাড়ি করে স্ত্রীসহ অতিকষ্টে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু ধরলার তীব্র ভাঙনে ভিটামাটি হারাতে বসেছি।’
একই এলাকায় আবুল হোসেন (৪১) বলেন, ‘নদী ভাঙতে ভাঙতে একেবারে আমাদের বাড়ি থেকে নদীর দূরত্ব ৩০ গজ। যে কোনো মুহূর্তে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছি।’
ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কাসেম আলী, মনসের আলী, আকবর আলী, আজগর আলীর ঘরবাড়ি। বিষয়টি জানিয়েছে কামাল হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, নুর আলম ও জাহিদুলসহ স্থানীয় যুবকরা বলেন, ‘দুই কোটি টাকা ব্যয়ে মুজিব কেল্লার ভবনসহ চর গোরক মন্ডলের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘চর গোরক মন্ডল এলাকায় গত বর্ষায় ধরলার তীব্র ভাঙনে ৪০টি পরিবার ও অর্ধ কিলোমিটার সড়কসহ শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওই সময় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ৫ থেকে ৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু ভাঙন ঠেকানো যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে হুমকির মুখে পড়েছে মুজিব কেল্লার ভবন, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ওই এলাকার প্রায় ৫০০ পরিবার। বর্ষার আগে ধরলার ভাঙন রোধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাছেন আলী বলেন, ‘ভাঙন এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। ভাঙন রোধের জন্য কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করবো।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘চর গোরক মন্ডল এলাকায় ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন ঠেকাতে গত বছর ৭ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে জিও ব্যাগ নেই। বরাদ্দ আসলেই সেখানে জিও ব্যাগ পাঠানো হবে।