ফেনীতে বন্যার পানি নামছে, বাড়ছে ভোগান্তি
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ২০টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ফুলগাজী ও পশুরাম উপজেলা থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করায় দৃশ্যমান হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরে তারা কর্দমাক্ত ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। ফেনী থেকে ফুলগাজী পর্যন্ত যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। এখনো পরশুরাম সড়াকে বন্ধ রয়েছে। যেসব এলাকা থেকে পানি সরে গেছে সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
এদিকে রান্না করতে গিয়ে বিষধর সাপের দংশনে রোকেয়া আক্তার রিনা (৪৮) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফেনীর পরশুরাম পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোকেয়া আক্তার রিনা ওই গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তিনি এক ছেলে, দুই কন্যা সন্তানের জননী। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসমাইল হোসেন।
জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া তথ্য মতে জানা যায়, মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ছাগলনাইয়া পয়েন্টে হরিপুর এলাকা হয়ে মুহুরি নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যারকারণে ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও দাগনভূঁইয়ার কিছু গ্রাম বেশ কয়েকটি এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে গেল রাতে ফেনী শহরের পেট্রোবাংলা এবং আরামবাগ এলাকায় কিছুটা পানি উঠেছিল। আবার সকাল হতে হতে পানি নেমে যায়। এ বন্যায় ৩৭ হাজার মানুষ পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এখনো সাড়ে ৪ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। ৫০০০ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরেছে। এখনো ৮৭টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে। উপজেলা সমূহে ১৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২২০০ প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার প্রদান করা হয়েছে।
ফুলগাজ বন্ধুয়া উত্তর দৌলতপুর গ্রামের সত্তরোর্ধ সুজন বিয়া বলেন, ‘ আমার ঘরটি আগ থেকে নড়বড়ে ছিল। এবারের বন্যায় বাকিটাও শেষ হয়ে গেল। এখনো পানি নামেনি।’
উল্লেখ্য, বন্যায় সর্বশেষ ১১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৬৭, ছাগলনাইয়ার ১৫, ফেনী সদর ১ ও দাগনভূঞায় ২ গ্রাম রয়েছে।