বিএনপির পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চায় কয়েকটি দল: প্রিন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
১১ জুলাই ২০২৫, ২১:১৩
শেয়ার :
বিএনপির পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চায় কয়েকটি দল: প্রিন্স

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, বিএনপির পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চায় কয়েকটি দল। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক সংঘাতে পরিবেশ বিনষ্ট করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের যুগলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া শাহ সুলতান ঈদগাহ মতগমাঠে ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন এবং সদস্য নবায়ন ও নতুন প্রাথমিক সদস্যদের রশিদ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রিন্স।

খোঁচাখুঁচি না করে জনগণের ওপর আস্থা রেখে নির্বাচনী ট্রেনে চড়ার জন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান বিএনপির এই নেতা।

এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপিকে ইঙ্গিত করে চোখ রাঙিয়ে গরম বক্তব্য দিয়ে রাজনীতি পল্টনো যায় না। বরং সংঘাত সৃষ্টিতে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। কোনো উসকানিতে বিএনপি পা দেবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী খেলোয়াডরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, নতুন খেলোয়ারের আবির্ভাব হয়েছে, তারা খেলা ও খেলার নিয়ম পাল্টে দিতে চায়। বিএনপি জনগণ ও রাজনীতি নিয়ে কোনো খেলা নয়, বাস্তবমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মন জয় করে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ণ করে শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে চায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি জনগণের রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে নেতাদের ড্রইংরুম থেকে বের করে গ্রামীণ জনপদে নিয়ে জবাবদিহিতা ও জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেছিলেন। শহীদ জিয়া গ্রামীণ জনপদে পায়ে হেঁটে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিএনপির জাতীয়তাবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এসব কথা রাজনীতির ময়দানে আসা নতুন দলের নেতারা হয়তো জানেন না, তবে তাদের অভিভাবকরা তা জানেন।

দমন-নিপীড়ন ও ফ্যসিবাদ মোকাবিলা করে শহীদ জিয়ার সেই রাজনীতি বিএনপি বহন করে চলেছে জানিয়ে প্রিন্স বলেন, নতুন দলের নেতারা রাজনীতির নতুন বন্দোবস্তের কথা বললেও পুরাতন বন্দোবস্তের আদলে বয়ান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। বিএনপি গণঅভ্যুত্থানসহ বিগত ১৫ বছরের শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে গণঅভ্যুত্থানের আকঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে দ্রুত সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন চায়। নির্বাচিত সংসদ ও সরকার ছাড়া অভ্যুত্থানের আকঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, শুধু আবেগ নয়, আবেগের সাথে যুক্তি দিয়ে রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে থেকে যারা সংস্কার ও বিচার কাজে দীর্ঘায়িত ও জটিলতা সৃষ্টি করেছে, তারাই এক বছরে প্রত্যাশিত ও আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ না পাওয়ার কথা বলে দায় এড়াতে চাচ্ছে। নির্বাচনে যারা জনগণের সমর্থন পাবে না, তারা নির্বাচন চায় না। সেজন্য বিভিন্ন অজুহাত তুলে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। লন্ডন বৈঠক এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার পর নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে মহল বিশেষের পায়তারা বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ইনশাআলাহ রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নেতাকর্মীদের প্রতি ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিয়ে ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করার আহ্বান জানান প্রিন্স।

এর আগে দুপুর ৩টায় খলিশাকুড়ি দাখিল মাদ্রাসা মাঠে ৮নং ওয়ার্ড এবং রাতে কলাপাগলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের সদস্য নবায়ন ও নতুন প্রাথমিক সদস্যদের সদস্য রশিদ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রিন্স। কৈচাপুর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামে জুমার নামাজ শেষে গণসংযোগ করেন তিনি।  

যুগলী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ক্বারী আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব কৃষক আব্দুস সাত্তারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আশরাফ, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, চেয়ারম্যন শফিকুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যন মোনায়েম হোসেন খান খোকন, বিএনপি নেতা অধ্যাপক মেহেবুবুর রহমান মুকুল, অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, শাজাহান মাহমুদ, রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আযাদ, রমজান আলী জহির, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, উপজেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আবদুল জলিল, মুকতাদির আহসান, আবু তালেব, জাহাংগীর আলম, হযরত আলী, সবুজ মিয়া ও মো. শওকত প্রমুখ।