সবাইকে সচেতন হতে হবে এক্ষুনি

বর্ষাকালের চোখের রোগ

প্রফেসর ডা. সৈয়দ একে আজাদ
১১ জুলাই ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
সবাইকে সচেতন হতে হবে এক্ষুনি

বর্ষাকালে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রায় সবাই। এখন বর্ষাকাল। রোগের প্রকোপ ক্রমে বাড়ছে। আক্রান্ত হয়ে পড়ছে মানুষ। বর্ষাকালের রোগগুলোর মধ্যে চোখ ওঠা রোগেও ইতোমধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।

মানুষের চোখের মাঝখানে কর্নিয়া বাদে বাইরের দিকের আবরণটির নাম কনজাংটিভাইটিস। এটি জীবাণু সংক্রমণে আক্রান্ত হলে দেহের কনজাংটিভারের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে রক্তনালিগুলো প্রসারিত হয়। এতে পানি উৎপাদনকারী গ্রন্থিগুলোর কাজ বেড়ে যায়। এ কারণে এ রোগে আক্রান্ত হলে চোখ লাল হয় এবং চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ে।

কনজাংটিভাইটিস জীবাণুর মাধ্যমে খুব বেশি চোখ আক্রান্ত হলে চোখের কোণে পুঁজ জমতে পারে। চোখ ওঠা রোগ ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার জীবাণুর মাধ্যমে হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগটি ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে। সাধারণত এডেনো ভাইরাসের মাধ্যমে কনজাংটিভাইটিস আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ রোগটি সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

চোখ ওঠার কারণ : স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া ও পরিবেশে বসবাস এ রোগে আক্রান্তের অন্যতম কারণ। বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকলে, ঠাণ্ডা-গরম এবং প্রকৃতিতে বাতাসের প্রবাহের ঘন ঘন পরিবর্তনে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্তের প্রবণতা বেড়ে যায়। অপুষ্টিতে ভোগে যারা, তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যেখানে আলো-বাতাস পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় না এমন স্থানে বাস করলে এ রোগ হতে পারে। অন্যান্য ভাইরাস, যেমনÑ মিজেলস (হাম), রুবেলা অথবা ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদিতে সংক্রমিত হলেও চোখ ওঠা রোগ হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায় : এজন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা এবং এক্ষনি সতর্ক হতে হবে সবাইকে। যে কাজগুলো করতে হবে তা হলো।

হাত পরিষ্কার রাখা : বারবার সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। চোখে হাত না দেওয়ার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে হাত না ধোয়া অবস্থায়।

ব্যক্তিগত সামগ্রী আলাদা রাখা : তোয়ালে, রুমাল, বালিশ, আই মেকআপ বা চোখের ড্রপ অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না।

আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখা : চোখ ওঠা ছোঁয়াচে হলে রোগী থেকে কিছুটা দূরে থাকাই ভালো, বিশেষ করে কনজাংটিভাইটিস হলে।

চোখে ধুলাবালি ঢোকা থেকে রক্ষা করা : বাইরে গেলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। চোখে অস্বস্তি লাগলে ঘষা নয়, বরং পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

ধূমপান ও ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা : ধোঁয়া বা রাসায়নিক গ্যাস চোখের জন্য ক্ষতিকর, যা সংক্রমণ বাড়াতে পারে।

চিকিৎসা : চিকিৎসা নির্ভর করে চোখ ওঠার কারণের ওপর। উল্লিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

লেখক : সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল

চেম্বার : আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা

০১৫৫২৪০৯০২৬, ০১৭১০৭৩৬০০৮