ফরিদার পারভীনের জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন, যা বলছে পরিবার
হাসপাতালে ভর্তি একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন। বর্তমানে তিনি রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হলে রাষ্ট্রের কাছে শিল্পীর জন্য উন্নত চিকিৎসা-সহায়তার দাবি জানিয়েছিল পরিবার। আর্থিক কোনো সহায়তা নয়, তারা চেয়েছিলেন- ফরিদার চিকিৎসার জন্য যেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এবার তা বাস্তবায়ন হলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদার স্বামী বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।
তিনি জানান, গতকাল বুধবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এদিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। ফরিদার চিকিৎসার ব্যাপারে কথা বলেছেন ডাক্তাররা। পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন তার যে শারীরিক অবস্থা- এই মুহূর্তে তা সম্ভব নয়। ফলে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী দেশেই পিজি বা সরকারি কোনো ভালো হাসপাতালে চিকিৎসা হতে পারে।’
এদিকে, ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের বিষয়ে জানিয়েছেন তার ছোট ছেলে ইমাম জাফর নোমানীও। গতকাল দিবাগত রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রথিতযশা কিডনি, বক্ষব্যাধি, হৃদরোগ ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড আম্মার (ফরিদা পারভীন) শারীরিক অবস্থা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করলেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষ থেকে দুজন কিডনি স্পেশালিস্ট বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন।’
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
এ সময় ফরিদার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান ইমাম জাফর নোমানী। সবশেষে তিনি মেডিকেল বোর্ডের তিনটি সিদ্ধান্তের কথা জানান-
১. ফরিদা পারভীনের বর্তমান শারীরিক জটিলতায় যেকোনো ধরনের মুভমেন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কোথাও নেওয়াটাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তার বর্তমান যে শারিরীক জটিলতা তাতে বিদেশে চিকিৎসা নিলেও যে উন্নতি হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
২. বর্তমানে শিল্পী তার প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা পাচ্ছেন যথাযথ তত্ত্বাবধানে। তবে কোনো কারণে যদি হাসপাতাল পরিবর্তন করতেই হয়, সেক্ষেত্রে মাল্টিডিসিপ্লিনারি (যেখানে সব শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা করা হয়) কোনো হাসপাতালে নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঢাকা মেডিকেল কলেজ অথবা বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (প্রাক্তন পিজি) নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে পরিবার বর্তমান হাসপাতালেই রেখে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত জানায়।
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
৩. যদিও তার অবস্থা কিছুটা ভালো হয়েছে, তবুও তিনি এখনও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছেন। বিশেষ করে ফরিদার শরীরে সংক্রমণের মাত্রা অনেক বেশি। আইসিইউ-তে অতিরিক্ত ভিজিটরের কারণে এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই লিভারের রোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা অসুস্থতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। কিডনি জটিলতার জন্য মাঝে তিনি ভারতের হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন।