নিখোঁজের একদিন পর মসজিদ থেকে ময়নার মরদেহ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের একদিন পর মসজিদের দোতলা থেকে ময়না (৯) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার সকালে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাবলিপাড়া জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ময়না উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়া এলাকার প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে। ময়না হাবলিপাড়া মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল। তবে পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা তাকে কে বা কারা ধর্ষণের পর হত্যা করে ফেলে যায়।
নিহত ময়নার মা মোসাম্মৎ লিফা আক্তার বলেন, ‘গতকাল শনিবার বিকেলে ময়না নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে থাকেন। মেয়ের সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয় এবং মাইকিং করে এলাকায় জানানো হয়। এর একদিন পর আজ রবিবার সকালে স্থানীয় মসজিদে পড়তে গিয়ে বাচ্চারা মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তার মরদেহ দেখতে পায়।’
খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ বিষয়ে ওই মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি চা খেয়ে এসে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম। এ সময় মসজিদের দ্বিতীয় তলা থেকে এক শিক্ষার্থী এসে বলছে একটি মেয়ের মরদেহ পড়ে রয়েছে। পরে স্থানীয়দের খবর দিলে তারা এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মসজিদের নিচতলায় ছাত্রদের পড়াই। দ্বিতীয়তলায় সালাউদ্দিন নামের আরেকজন শিক্ষক পড়ায়।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল শনিবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। পরে আজ সকালে স্থানীয় এক মসজিদের দ্বিতীয়তলায় মক্তবে শিক্ষার্থীরা আরবি পড়তে যায়। এসময় শিশু ময়নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা।’
ওসি আরও বলেন, ‘শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।’
সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার বলেন, ‘ঘটনার পরে গতকাল রাতেই ওই পরিবার একটি নিখোঁজের জিডি করে। এরপর থেকে থানা পুলিশের একটি টিম শিশু ময়নাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে আজ সকালে খবর পাই মসজিদের দ্বিতীয়তলা একটি মেয়ের মরদেহ পড়ে রয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেমকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’