অস্ত্রধারীরা প্রকাশ্যে, খুঁজে পায় না পুলিশ
তালতলা মার্কেটে কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত
রাজধানীর রামপুরা থানাধীন খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন সুপার মার্কেটে অবৈধভাবে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে ওই মার্কেটের সুপারভাইজার মো. জালাল সরদারসহ কয়েকজনকে কুপিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। গত বৃহস্পতিবার দিনের আলোয় প্রকাশ্যে নৃশংস এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় জড়িত ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অচেনা আরও ৬০ জনের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রাতে মামলা করেন মার্কেটের প্রধান নিরাপত্তারক্ষী মো. হোসেন বাবু। কিন্তু মামলা করে উল্টো বিপাকে আছেন বাদী ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা ঘটনায় জড়িত। রবিউল ইসলাম রবি নামে এক আসামিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করলেও হামলার দুই দিনেও পুলিশ অন্য আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো, মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে গত শুক্রবার রাতে ফের সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে আসামিরা। এ ঘটনায় এখন থমথমে ভাব বিরাজ করছে মার্কেটে। কখন কী হয়, এই আশঙ্কায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দোকানদাররা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রহস্যজনক কারণে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না বা ধরছে না। হামলার প্রতিবাদ ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে গতকাল শনিবার দুপুরে তালতলা সিটি করপোরেশন সুপার মার্কেট বণিক সমিতির নেতাকর্মী ও দোকানদাররা মানববন্ধন করেছেন। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী ও ডিএমপি কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তালতলা সুপার মার্কেট বণিক সমিতির অফিস সেক্রেটারি পরাগ জামান জানান, গত বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মার্কেটের অবৈধ ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ করে। আদালত চলে যাওয়ার পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা ফের অবৈধ দোকানপাট বসানোর চেষ্টা করলে মার্কেট কমিটি ও নিরাপত্তা প্রহরীরা তাদের বাধা দেন। এই ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে স্থানীয় লিমন, রনি ওরফে জোলা রনি, জাকির, আলাউদ্দিন, জাফরান মুরাদ, অলি, রবিন, জুয়েল, আপেল রবিউল ইসলাম রবি, শহীদুল্লাহ, রহমত উল্লাহ রাহাত, নাঈম ইসলাম ওরফে নাদু, সাদ্দাম, পারভেজ, আব্দুল সোবহান, সোহেলসহ অচেনা ৬০ জন মার্র্কেটে ঢুকে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে লুটপাটের চেষ্টা চালায়। তারা চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তালতলা মার্কেটের সিঁড়ির নিচে যাকে পেয়েছে তাকেই এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। হামলায় কর্তব্যরত সুপারভাইজার জালাল সরদার গুরুতর আহত হন। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন।
পরাগ জামান বলেন, মামলা করার পর আমরা উল্টো বিপাকে আছি। মামলা তোলার হুমকি দিয়ে গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এজাহারভুক্ত আসামিরাসহ অচেনা বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী ফের সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে মার্কেটে। কিন্তু পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছে না। এই ঘটনার প্রতিবাদে বণিক সমিতির কর্মকর্তারা এবং ব্যবসায়ীরা শনিবার (গতকাল) দুপুর ১২ থেকে এক ঘণ্টা মার্কেট বন্ধ রাখেন। প্রতিবাদস্বরূপ মার্কেটের সামনে আমরা বিক্ষোভের পাশাপাশি মানববন্ধনও করেছি। কিন্তু আতঙ্ক কাটছে না।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামপুরা থানার এসআই মো. আকতার হোসেন শিমুল আমাদের সময়কে বলেন, ওই হামলার ঘটনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। এজাহারনামীয় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।