সিরিজ বাঁচানোর লড়াই

ক্রীড়া ডেস্ক
০৫ জুলাই ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
সিরিজ বাঁচানোর লড়াই

কলম্বোতে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ উপহার দিয়েছে দুঃস্বপ্ন। ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে শ্রীলংকার কাছে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারের মধ্য দিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ যুগে প্রবেশ করল টাইগাররা। তিন ম্যাচের সিরিজে আজ টিকে থাকার লড়াইয়ে নামবে সফরকারীরা। দুপুরের পর একই ভেন্যুতে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

শ্রীলংকা সফরে যাওয়ার আগে ওয়ানডে সংস্করণে টানা ৬টি ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। সবশেষ ১১ ম্যাচের ৮টিতেই হার। সব মিলিয়ে লংকানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেটা টাইগারদের জন্য বৃত্ত ভাঙার উপলক্ষ ছিল। রান তাড়ায় কক্ষপথেও ছিল বাংলাদেশ। ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে দলীয় শতক ছুঁয়ে ফেলেছিল দল। অমন সময় ভয়ংকরভাবে ধসে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং অর্ডার। ৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ অবধি ১৬৭ রানে অলআউট। জাকের আলী অনিক এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যক্তিগত ফিফটি না করলে হয়তো হারের সংখ্যাটা তিন অঙ্কে থাকতে পারত। ব্যাটিং অর্ডার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া নিয়ে বাংলাদেশ দলের পেসার তাসকিন আহমেদ গতকাল সংবাদমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘আমি ড্রেসিংরুমে কফি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই ৫ উইকেট পড়ে গেল। আশা করি, পরের ম্যাচেই আমরা ঘুরে দাঁড়াব এবং সবাই ভুল থেকে শিক্ষা নেবে।’ এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য নতুন কিছু নয়। হারের পুনরাবৃত্তিই ঘটতে থাকে।

অবশ্য বাজে ব্যাটিংয়ের জন্য কিছুটা দুর্ভাগ্যও আছে। এরপর ২৬ বলের ধসের শুরুটা হয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউট দিয়ে। ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এটাই বড় করে দেখছিলেন বাংলাদেশের নতুন স্থায়ী অধিনায়ক মিরাজ। ব্রেক থ্রু পাওয়ার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শ্রীলংকাকে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিসের স্পিন ছোবলে শেষ হয়ে যায় টাইগারদের লড়াই ও জয়ের স্বপ্ন।

অবশ্য ড্রেসিংরুমে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল তানজিদ হাসান তামিমের আউটের পরই। তাসকিন এমনটিই জানালেন। বাংলাদেশ পেসার নিজেও ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু বিফলে গেছে তার দারুণ বোলিং। আড়ালে চলে গেছে তার পারফরম্যান্স। বাজে ব্যাটিং এবং ভয়ংকর ধস উঠে এসেছে দৃশ্যপটে। হার নিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘দুর্দান্ত শুরুর পর, আমরা কিছুটা স্বস্তিতে ছিলাম। সবকিছু আমাদের পক্ষেই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ সেই রান আউট এবং ক্রিজে সেট ব্যাটার তানজিদ আউট হয়ে গেল। এরপর আমরা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’ তাসকিন যোগ করেন, ‘আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারিনি এবং চাপের মুখে ভেঙে পড়েছিলাম। পরিসংখ্যান মতে এটি লো স্কোরিং মাঠ। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে এবং ম্যাচ হারার আশঙ্কাও বেশি থাকে। তার পরও ম্যাচটি আমাদের হাতে ছিল এবং আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’

এখন পর্যন্ত শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৮ ম্যাচে ১২টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বিপরীতে ৪৪টি হার রয়েছে। দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেছে। এবারের সফরের প্রথম ওয়ানডেতে সুযোগ ছিল লংকানদের সঙ্গে ব্যবধান কমানোর। কিন্তু আশা জাগিয়ে নিরাশ করেছে দল। তাসকিন মনে করেন দলের পারফরম্যান্সে উন্নতি দরকার। তার ভাষায়, ‘আমাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে এটি অপরিহার্য। আমাদের সেরা ১৫-২০ জন খেলোয়াড় নিয়ে দল গঠিত। বোলিং-ব্যাটিং মিলিয়ে ও খেলার সচেতনতার অভাবে আমরা শীর্ষ দলগুলোর থেকে কিছুটা পিছিয়ে আছি। আমরা একটি ভালো পরিবেশ এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে এটি উন্নত করার চেষ্টা করছি।’