মোহাম্মদপুরের কব্জিকাটা গ্রুপের প্রধান টুন্ডা বাবু গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মো. বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবুকে (৩১) র্যাব-২ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করেছে ।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মোহম্মদপুরের ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মো. বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবুকে (৩১) গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে র্যাব-২ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর অন্যতম প্রধান সহযোগী সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মো. বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সে ও তার গ্যাংয়ের লোকজন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত টুন্ডা বাবু মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের নিয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শ্যামলী হাউজিং ২ নং প্রজেক্টে টুন্ডা বাবুকে সামুরাই ও ছুরি হাতে কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শোডাউন করতে দেখা যায়। এ সংক্রান্ত একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। টুন্ডা বাবুর সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য তাকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি র্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে সে গত ০৫ মে জামিনে মুক্ত হয়ে পূর্বের ন্যায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এছাড়া টুন্ডা বাবুর বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি, ও ডাকাতির প্রস্তুতিসহ ১০টির অধিক মামলা রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. বাবু খান ওরফে টুন্ডা বাবু জানায়, মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং আনোয়ার ওরফে কব্জিকাটা আনোয়ারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে সে পরিচিতি পায়। সে কব্জিকাটা আনোয়ারের নির্দেশে মোহাম্মদপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল, চুরি-ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন সস্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি, ও ডাকাতির প্রস্তুতিসহ ১০টির অধিক মামলা রয়েছে এবং সে বিভিন্ন মেয়াদে একাধিকবার কারাভোগ করে। সাধারণত দিনের বেলায় তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কম জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পথচারীদের জিম্মি করে নগদ অর্থ, মোবাইল, ল্যাপটপ, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে এবং রাত গভীর হলেই বাসাবাড়ি, ফ্লাট গিয়ে ও রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে র্যাব-২ এর অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা হতে জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী ভূইয়া সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল, মাদক ব্যবসায়ী চুয়া সেলিম গ্রুপের প্রধান মো. সেলিম আশরাফী ওরফে চুয়া সেলিম বা চোরা সেলিম এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘কব্জিকাটা গ্রুপ’ এর প্রধান মো. আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার বা কব্জিকাটা আনোয়ারকে তাদের সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। মূলত, এরই ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদপুর কেন্দ্রিক সকল সন্ত্রাসী গ্রুপের মূল উৎপাটন করার লক্ষে র্যাব-২ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে জোড়াল ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।