পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে কী হবে, জানালেন রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আনুপাতিক ভোটের (পিআর) পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে আর কোনো স্থানীয় নেতার জন্ম হবে না। সংসদীয় আসনে পছন্দের প্রার্থী এমপি হতে পারবে না। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ‘বিজয়ের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন রংপুর (ড্যাব)।
রিজভী বলেন, ‘আমরা চিরায়ত গণতন্ত্রের পক্ষে, যেখানে বৈধ ভোটাররা ভোট দিয়ে নিজের এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে। একজন মানুষ দীর্ঘদিন মানুষের পাশে থেকে নেতা হয়েছেন, অথচ আনুপাতিক ভোটে তাকে নয়, দলকে ভোট দিতে হবে। এরপর দল থেকে বাছাই করে এমপি ঘোষণা করা হবে-এটি আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রায় ১২ কোটি ভোটার রয়েছে, সেই ১৮ কোটি মানুষের দেশে কেন এমন ভোট পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে? যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে, বছরের পর বছর কারাবরণ করেছে, সেই গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে দেশের কোনো তরুণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। কখন কাকে ধরে নিয়ে যাবে, আর কার রক্তাক্ত লাশ তিস্তা, গঙ্গা কিংবা শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে পাওয়া যাবে-এটাই ছিল নিত্যদিনের চিত্র। এই ভয়াবহ সময় পার করতে হয়েছে আমাদের। শেখ হাসিনার দমন-পীড়নের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সেই রক্তপিপাসুরা যাতে আবার ফিরে না আসতে পারে, তার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে হচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে মুক্তভাবে মতপ্রকাশ ও সমালোচনার সুযোগ থাকবে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাই এক হতে পারি। গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অকল্পনীয় দমন-পীড়ন চালিয়েও দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা যায়নি। গুম, খুন ও নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি ঐক্য ধরে রেখেছে। গণতন্ত্রের আন্দোলনে বিএনপি সবসময় আপসহীন।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়ানো চলবে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের আচরণে যেন সাধারণ মানুষ কষ্ট না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন বিএনপির কাছ থেকে ন্যায়বিচার পায়, সেই বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ যদি এসব অপকর্মে জড়িত থাকে, দল সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে-এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মাহফুজ উন নবী ডন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন, রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শরীফুল ইসলাম মন্ডল প্রমুখ।